মুক্তিযুদ্ধে পাঁচবিবি উপজেলা (জয়পুরহাট)
পাঁচবিবি উপজেলা (জয়পুরহাট) বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ-এর পর পাঁচবিবি থানায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন- ও ন্যাপ-এর নেতাকর্মীরা স্বাধীনতার পক্ষে শহর জুড়ে প্রতিদিন মিছিল-সমাবেশ করতে থাকে। ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পর ডা. সাইদার রহমান এমপিএ-কে সভাপতি এবং থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোমিও ডাক্তার আজিজুর রহমান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। সংগ্রাম পরিষদে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের থানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বেই পাঁচবিবিতে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়। পাঁচবিবি থানা সার্কেল অফিসার এ কে ফেরদৌসের অফিস পরিণত হয় সংগ্রাম কমিটির গোপন কার্যালয়ে। ছাত্র ইউনিয়ন নেতা আমিনুল হক বাবুলকে আহ্বায়ক করে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। এছাড়া মীর শহীদ মণ্ডল (ন্যাপ নেতা), কামাল উদ্দিন মণ্ডল, মজির উদ্দিন মণ্ডল (মন্টু), শরিফা চৌধুরী, শামসুল হোদা সরদার, ডা. আমিনুর রহমান (টুকু), নজরুল ইসলাম, আমিনুল হক বাবুল প্রমুখের নেতৃত্বে ন্যাপ (মোজাফফর), ন্যাপ (ভাসানী) এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা পৃথকভাবে মিছিল-সমাবেশ করতে থাকেন।
সংগ্রাম কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মার্চের শেষ দিকে কড়িয়াস্থ ইপিআর হেডকোয়ার্টার্স ও অন্যান্য ক্যাম্পের ইপিআর জোয়ানদের নছির মণ্ডল বালিকা বিদ্যালয়ে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের সহায়তায় লালবিহারী পাইলট স্কুল এবং স্টেডিয়ামে ছাত্র-যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হাবিলদার মকবুল হোসেন, নায়েক কাশেম, ল্যান্স নায়েক ভুলু প্রমুখ। সশস্ত্র প্রশিক্ষণ চালু হওয়ায় আক্কেলপুর থানার একদল মুক্তিযোদ্ধাও এখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সংগ্রাম কমিটির আদায়কৃত পাঁচবিবি হাট ইজারার অর্থ এবং ছাত্রদের দ্বারা গ্রাম থেকে সংগৃহীত চাল ও অন্য সামগ্রী দিয়ে ইপিআরদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। খাদ্য সংগ্রহ কাজে বাঁধা দেয়ায় আটাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুসলিম লীগ – নেতা ডা. রুস্তম আলীকে সংগ্রাম কমিটি এবং ছাত্র নেতৃবৃন্দের নিকট ক্ষমা চাইতে হয়। সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ১৫ই এপ্রিল থেকে উগ্র স্বভাবের কয়েকজন বিহারিকে লালবিহারী স্কুলে আটকে রাখেন। ২০শে এপ্রিল পাকবাহিনী পাঁচবিবিতে প্রবেশ করলে প্রশিক্ষণরত মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে চলে যান এবং পাকবাহিনী প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ করে।
জয়পুরহাটের অধীনে পাঁচবিবির যুদ্ধ পরিচালিত হয়। সেপ্টেম্বর মাসে জেলার ডেপুটি কমান্ডার প্রদীপ কুমার কর পাঁচবিবির কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া আবদুল মোতালেব মণ্ডল এবং আসাদুজ্জামান বাবলু কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতা ঘোষণার পর থানার ওসি আফছার এবং সার্কেল অফিসার ফেরদৌসের সহযোগিতায় পাঁচবিবি থানায় জমা দেয়া জনগণের অস্ত্র, থানার অস্ত্র ও এ এলাকার আদিবাসী সাঁওতালদের তীর-ধনুক ও বল্লম নিয়ে সংগ্রাম পরিষদের নেতা-কর্মীরা দিনরাত পাহারা দেয়া শুরু করেন। প্রশিক্ষণরত মুক্তিযোদ্ধা ও ইপিআর সদস্যরা উপজেলার পূর্ব দিক থেকে পাকবাহিনীর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পার্শ্ববর্তী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রংপুর সড়কের কাটাখালী ব্রিজ ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করেন এবং বকুলতলায় রেললাইন তুলে ফেলেন। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের হারামতি নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের ব্রিজ ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বাঙ্গালদহ ব্রিজ ভেঙ্গে ফেলেন।
২০শে এপ্রিল দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা থেকে পাকবাহিনী ৬টি গাড়িতে করে ভারী অস্ত্র নিয়ে পাঁচবিবিতে অনুপ্রবেশ করে এবং সিও অফিস (সার্কেল অফিস) ও স্টেডিয়ামে ক্যাম্প স্থাপন করে। মেজর আফজাল ও মেজর পিটার পাকবাহিনীর ইনচার্জ হিসেবে ক্যাম্পে অবস্থান করে এখানকার ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ন্ত্রণ করত।
পাকবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপনের পরই পাঁচবিবিতে মুসলিম লীগের সভাপতি কাশেম উদ্দিন চৌধুরী (বীরনগর)-কে সভাপতি এবং ডা. রোস্তম আলীকে (আটাপুর) সেক্রেটারি করে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। জয়পুরহাটের রাজাকার বাহিনীর প্রভাবশালী নেতা এবং শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল আলিম স্থানীয় শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের নিয়ে পাঁচবিবি থানায় পাকবাহিনীর হত্যা, লুণ্ঠন এবং ধ্বংসযজ্ঞে সহযোগিতা করে।
২০শে এপ্রিল অনুপ্রবেশ করেই পাকবাহিনী পাঁচবিবি বাজারে গণহত্যা চালায়। পাঁচবিবি বাজার গণহত্যায় দোকানের সামনে ধুতি পড়ে দাঁড়িয়ে থাকায় ননী গোপাল কুন্ডু, ‘জয় বাংলা’ বলে চিৎকার দেয়ায় দানেজপুরের ছাত্তার পাগলা, পাঁচবিবি থানার দারোগা আফছার, দুজন কনস্টেবল, শিক্ষক বিমল কুমার কুণ্ডুসহ ৩ জন হাটুরে দরিদ্র কৃষক নিহত হন। এ সময় তারা পাঁচবিবি থানা, ইপিআরের আবাস স্থল নছির মণ্ডল বালিকা বিদ্যালয়, লালবিহারী হাই স্কুলের শহীদ মিনারসহ বেশ কিছু ঘরবাড়ি মর্টারের গোলায় ধ্বংস করে এবং বাজারের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে। একই সময় হিলি থেকে আগত পাকবাহিনীর আরেকটি দল হিন্দুপাড়ার দুলাল অধিকারী (সাংবাদিক), নরেন মোহন্ত (শিক্ষক), মনিরউদ্দিন মণ্ডল, ভবেশ চন্দ্র (মহুরি)-এর বাড়িসহ রিফিউজিপাড়া ও ঘোড়াপা গ্রামের অনেকগুলি বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ২০শে এপ্রিল শান্তি কমিটির নেতা আবদুল আলিম দমদমা গ্রামের মেহেরউদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনার পরে মেহেরউদ্দিন স্বপরিবারে দেশত্যাগ করেন।
২৭শে এপ্রিল বকুলতলায় রেললাইন তুলে ফেলায় পাকবাহিনী খুলনা থেকে সৈয়দপুরগামী একটি ট্রেনের প্রায় ২ শতাধিক মানুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে, যা বকুলতলা গণহত্যা নামে পরিচিত। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ভারতে যাওয়ার সময় রেললাইনে পাহারারত পাকবাহিনী শরণার্থীদের গুলি করে হত্যা করত।
এপ্রিল ও মে মাসে পাকবাহিনী শান্তি কমিটির নেতা আব্দুল আলিমের প্ররোচনায় বকুলতলা রেললাইনের পার্শ্ববর্তী কোকতাঁরা, ঘোড়াপা, কুটাহারা ও বাগজানা গ্রামে গণহত্যা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। ২০ ও ২৭শে এপ্রিল এবং মে মাসের প্রথম দিকে সংঘটিত বাগজানা গ্রাম গণহত্যায় দুশতাধিক মানুষ শহীদ হন। এছাড়া কোকতাঁরা গ্রাম গণহত্যায় ৮ জন, ঘোড়াপা গ্রামে ৩ জন এবং কুটাহারা গ্রামে ১ জন নিহত হয়। শান্তি কমিটির নেতা রাজাকার আবদুল আলিম ২৬শে মে পাকসেনাদের সহায়তায় নওদা গ্রাম আক্রমণ করে। পাকসেনারা সেখান থেকে তিন সহোদর ইলিয়াস উদ্দিন সরদার, ইউসুফ উদ্দিন সরদার, ইউনুস উদ্দিন সরদার ও আবদুল কাদের মণ্ডলকে আটক করে বালিঘাটা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আবদুল আলিমের পরামর্শে কালী সাহার পুকুর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়। ২৫শে আগস্ট পাঁচবিবি বাজার থেকে স্থানীয় রাজাকাররা সোলেমান আলী ফকির এবং তার দুই বন্ধু আবদুস সামাদ মণ্ডল ও উমর আলী মণ্ডলকে পাকসেনাদের হাতে তুলে দেয়। শান্তি কমিটির নেতা আবদুল আলীমের নির্দেশে পাকসেনা ক্যাম্পে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরবর্তীতে আবদুল আলীম ও একজন কর্নেল র্যাংকের পাকসেনা চিনিকলের ক্লাবঘরে কোর্ট বসিয়ে ক্যাম্পে আটক ২৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং রাতেই তাদের হত্যা করা হয়।
সেপ্টেম্বর মাসে শ্রীমন্তপুর গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার খোকার নেতৃত্বে নন্দইল গ্রামে এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এতে আদিবাসী যোহন সরেন, ফিলিপ সরেন, খোকা সরেন ও মন্টু হেমরম শহীদ হন। পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর গ্রামেও রাজাকাররা নির্মমভাবে কয়েকজনকে হত্যা করে।
২৫শে অক্টোবর পাঁচবিবির আফতাব হোসেন, আবদুল খালেক, আবদুস সামাদসহ ২৫ জনকে শান্তি কমিটির নেতা আবদুল আলীমের নির্দেশে জয়পুরহাট চিনিকলে আটকে রাখা হয়।
২৭শে অক্টোবর পাকবাহিনী জয়পুরহাট কলেজের ছাত্র জমির উদ্দিন (কড়িয়া) ও ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লোকমান হোসেন (রামকৃষ্ণপুর)-কে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা ময়েজ ফকির (মালঞ্চা)-কে পুত্র তফিজ ফকিরের সামনে পাঁচবিবি স্টেশনে কয়লা চালিত ট্রেনের ইঞ্জিনের বয়লারে পুড়িয়ে হত্যা করে এবং পুত্রকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। তারা কমিউনিস্ট নেতা কামাল হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা মির আকবর হোসেনকে পৌরসভার রেললাইনের পাশে কালী সাহার পুকুর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে। তাদের হাতে পশ্চিম বালিঘাটা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সানোয়ার হোসেন বগুড়া ও নাটোর জেলাখানায় অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হন।
নভেম্বরে ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্টের সুবেদার মেজর জব্বার হোসেন আহত হয়ে ধুরোলি গ্রামের নাজিম উদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ খবর পেয়ে শান্তি কমিটির নেতা আবদুল আলীমের নেতৃত্বে পাকসেনা ও রাজাকাররা নাজিম উদ্দিনের বাড়িতে হামলা করে জব্বার হোসেনকে আটক করে জয়পুরহাট নিয়ে হত্যা করে।
পাকসেনাদের হামলায় কুতুবিয়া ধরঞ্জি উচ্চ বিদ্যালয় ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়। তারা লালবিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরির কয়েক হাজার বইপত্র এবং বালিঘাটা ইউনিয়নের পাঁচবিবি মিতালী সংঘ পাঠাগারের বইপত্র লুটপাট ও ধ্বংস করে। নিশ্চিত পরাজয় জেনে পাকবাহিনী ১২ই ডিসেম্বর ছোট যমুনা নদীর ওপর মাউরিতলা ব্রিজ ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করে। সার্কেল অফিস ক্যাম্প ছিল পাকবাহিনীর নির্যাতনকেন্দ্র ও বন্দিশিবির।
পাঁচবিবির কালী সাহার পুকুর পাড় এবং বালিঘাটা ইউনিয়নের কোকতাঁরা গ্রামের রেললাইনের পাশ বকুলতলা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। এ দুটি স্থানে গণকবর রয়েছে। পাঁচবিবিতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক যুদ্ধ হয়েছে। লকমা বিওপি ক্যাম্প, আটাপাড়া বিওপি ক্যাম্প ও বাগজানা ইউনিয়নের রামভদ্রপুর স্কুলে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি কড়িয়ার লকমা বিওপি ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন চালান। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী এ-যুদ্ধে ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৮ই সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা আটাপাড়া বিওপি ক্যাম্প ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। এ অপারেশনে ভারতের কামারপাড়া কুরমাইল ক্যাম্পের ডোগরা বাহিনীর অধীনে কমান্ডার আবুল হোসেনের নেতৃত্বে ৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল নেতৃত্ব দেন। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে পাকবাহিনী রাতের আঁধারে বাগজানা ইউনিয়নের রামভদ্রপুর স্কুলে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে হামলা চালালে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধের ঘটনা ঘটে এবং পাকবাহিনী পিছু হটে। এছাড়া পাকবাহিনীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য মুক্তিযোদ্ধারা ভারত সীমান্ত থেকে কড়িয়া বিওপিতে এসে প্রায়শই ফাঁকা গুলি ও বিওপি লক্ষ করে গ্রেনেড ছুঁড়ে মারতেন।
১৩ই ডিসেম্বর রাত থেকে সীমান্ত পথে মিত্রবাহিনী এবং মুক্তিযোদ্ধারা পাঁচবিবি প্রবেশ করলে আতঙ্কিত পাকসেনারা পালিয়ে যায় এবং বিনা বাঁধায় তাঁরা পাঁচবিবি দখল করে নেন। ১৪ই ডিসেম্বর পাঁচবিবি হানাদারমুক্ত হয়।
পাঁচবিবি উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন— নায়েক ফজলুর রহমান (পিতা আব্বাস আলী, রতনপুর, ধরঞ্জী), সিপাহি শরীফ উদ্দিন (পিতা আয়েজ উদ্দিন, কাঁচনা), সোলায়মান আলী (পিতা জমির উদ্দিন, উচনা), নিজাম উদ্দিন সরকার ও আলীম উদ্দিন সরকার (পিতা সাহার উদ্দিন সরকার, বাগজানা), লোকমান হোসেন (পিতা কাছের আলী মণ্ডল, পশ্চিম কৃষ্ণপুর, আয়মারসুলপুর) এবং সিপাহি মো. আজিম উদ্দিন (মে মাসে পাঁচবিবিতে ৭নং সেক্টরের অধীনে পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে শহীদ)।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের জন্য ইপিআর হাবিলদার আবদুর রহমান (কড়িয়া)-কে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে পাঁচবিবি উপজেলা চত্বরে এবং লালবিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের অবদানের জন্য নন্দইল গ্রামে ভাস্কর্য। নির্মাণ করা হয়েছে। পাঁচবিবির পাঁচমাথা থেকে স্টেশন পর্যন্ত • সড়কের নাম শহীদ বিমল সড়ক এবং কবরস্থান সড়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোত্তালেব সড়ক নামে নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা সদরে সিপাহি মো. আজিম উদ্দিনের কবরটি বাঁধাই করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। কালী সাহা পুকুর পাড়ের বধ্যভূমি ও গণকবরে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। [সাঈদ জাফর চৌধুরী ওরফে সুমন চৌধুরী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড