পশ্চিম সাতলা গণহত্যা (উজিরপুর, বরিশাল)
পশ্চিম সাতলা গণহত্যা (উজিরপুর, বরিশাল) সংঘটিত হয় ১৬ই জুন। এতে ৯ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারায়।
উজিরপুর উপজেলা সদর থেকে ৩৫ কিমি পশ্চিমে কচা নদীর তীরঘেঁষা বিলাঞ্চল সাতলা গ্রাম। ঘটনার দিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গানবোটে এসে সাতলা বাজারের পশ্চিম পাশে ওয়াপদা অফিসের সামনে নোঙর করে। সাতলা ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সভাপতি আক্কেল আলী বালী (পিতা কাহিল উদ্দিন বালী, সাতলা), সেক্রেটারি আবদুল মজিদ আজাদ (পিতা এলাহী বক্স, সাতলা), রাজাকার সদস্য লতিফ খলিফা, মাজেদ খলিফা, আবদুল হালিম হাওলাদার, আবদুল হক হাওলাদার, আবদুল মজিদ মাস্টার প্রমুখের সহযোগিতায় চারদিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে পাকিস্তানি বাহিনী ডাকবাংলোয় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। এরপর তারা পার্শ্ববর্তী অধিকারী বাড়ি, হালদার বাড়ি ও বাড়ৈ বাড়িতে আক্রমণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে। এ-সময় গাছের ওপরে আশ্রয় নেয়া দুই সহোদর লালমোহন অধিকারী ও ভবসিন্ধু অধিকারীকে তারা গুলি করে হত্যা করে। তাদের লাশ পুকুরের পানিতে ভাসতে থাকে। পাকিস্তানি বাহিনী হালদার বাড়ির অধিকাংশ ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। বাড়ির মানুষ ভয়ে পাটক্ষেতে আশ্রয় নিলে রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি বাহিনী তাদের খুঁজে বের করে গুলি করে হত্যা করে। এ গণহত্যায় ৯ জন মানুষ শহীদ হন। তাদের গণকবরে সমাহিত করা হয়। স্থানটি বর্তমানে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। পশ্চিম সাতলা গণহত্যায় শহীদ ৭ জনের পরিচয় জানা যায়। তারা হলেন- লালমোহন অধিকারী (৬০) (পিতা কৃষ্ণ চন্দ্র অধিকারী), ভবসিন্ধু অধিকারী (৬৫) (পিতা কৃষ্ণ চন্দ্র অধিকারী), পঞ্চরাম হালদার (৮০), নরহরি হালদার (৫০), ভেজাল সমাদ্দার (৬৫), পরিক্ষীত বাড়ৈ (৭০) ও শীতল বাড়ৈ (৬৫)। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড