পশ্চিমগ্রাম গণহত্যা (ইটনা, কিশোরগঞ্জ)
পশ্চিমগ্রাম গণহত্যা (ইটনা, কিশোরগঞ্জ) সংঘটিত হয় ২৬শে আগস্ট। এতে বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
ঘটনার দিন সকাল বেলা ৬-৭টি নৌকায় করে পাকিস্তানি হানাদাররা গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তি নলিনী রঞ্জন রায়ের বাড়িতে আসে। রায়টুটী গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার মানিক মিল্কী তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে। নলিনী রঞ্জন বাড়ি থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা প্রথমে নলিনী রঞ্জনের বাড়িতে তল্লাশি ও লুটপাট চালায়। এরপর বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক ব্রজেন্দ্র লাল সাহাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরে পাশের বাড়ির দুজন মহিলাকে বেয়নেটের আঘাতে হত্যা করে। এক সময় পাকসেনারা এ বাড়ির পার্শ্ববর্তী রমেন্দ্র রায়ের বাড়ি ঘেরাও করে। এ বাড়ির নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সকলকে উঠানে জড়ো করে। আটককৃতদের মধ্যে ছিলেন রমেন্দ্র রায়ের বৃদ্ধ মা, তার ভাই, ভ্রাতৃবধূ, স্ত্রী এবং দুটি বালক-বালিকা। পরে পাকিস্তানি বর্বররা সবাইকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে মৃতদেহগুলো নৌকায় তুলে হাওরের পানিতে ভাসিয়ে দেয়।
পশ্চিমগ্রামে যারা পাকবাহিনীর হাতে গণহত্যার শিকার হন, তাদের কয়েকজন হলেন- ব্রজেন্দ্র লাল সাহা, অমূল্যের মা (স্বামী গগন চন্দ্ৰ বণিক), প্রতাপের মা (স্বামী রমেন্দ্র বর্মণ), মাতঙ্গ রানী রায় (স্বামী সুরেন্দ্র চন্দ্র রায়), সুষমা রানী রায় (স্বামী রমেন্দ্র চন্দ্র রায়), রমেশ চন্দ্র রায় (পিতা সুরেন্দ্র চন্দ্র রায়), বিভা রানী রায় (স্বামী রমেশ চন্দ্র রায়), প্রাণেশ চন্দ্র রায় (পিতা রমেশ চন্দ্র রায়), অরবিন্দ রায় (পিতা রমেশ চন্দ্র রায়), অমর চান সাহা ও প্রেমলতা সাহা (স্বামী বল্লভ চন্দ্ৰ সাহা)। [মো. রওশন আলী রুশো]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড