পশ্চিম ভরনশাহী গণকবর (ধুনট, বগুড়া)
পশ্চিম ভরনশাহী গণকবর (ধুনট, বগুড়া) বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলায় অবস্থিত। ৫ই নভেম্বর এখানে ২১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়।
ধুনট থানা ভবনের ২০০ গজ দূরে রাস্তার পাশে পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামে দুটি গণকবর রয়েছে। ৫ই নভেম্বর পাকিস্তানি সেনারা পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামে ২১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। জনৈক জালাল মণ্ডলের জমির ওপর এ হত্যাকাণ্ড ঘটে এবং সেখানেই নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। স্বাধীনতার পরে গণকবর দুটি প্রাচীরবেষ্টিত করা হয়। গণকবরের দেয়ালে খোদাই করে ১৪ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম লেখা হয়েছে। এ গণকবরে যাঁদের মৃতদেহ রাখা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৭ জন হলেন— ভরনশাহী গ্রামের জহির উদ্দিন, কান্তগর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান, মাজবাড়ি গ্রামের জিল্লুর রহমান, ফরহাদ আলী ও পর্বত আলী, চাঁন্দারপাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফ, শিয়ালী গ্রামের নরুল ইসলাম। ভরনশাহী গ্রামের এক ব্যবসায়ী চালকল ও গুদামঘর নির্মাণ করে গণকবরটি ঘেরাও করে রেখেছেন। ফলে দূর থেকে এটি চেনার কোনো উপায় নেই। পাকিস্তানি বাহিনী তাদের সহযোগীদের সঙ্গে কান্তগর, মাজবাড়ি, চান্দারপাড়া ও শিয়ালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে এবং গ্রামগুলো থেকে নিরীহ মানুষজনকে ভরনশাহী গ্রামে ধরে আনে। সেখানে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন করে তাদের হত্যা করে। রাজাকাররা গণহত্যায় পাকিস্তানি সৈন্যদের সহযোগিতা করে। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা গণহত্যা সংঘটিত করে যাওয়ার পর এলাকাবাসী নিহতদের গণকবর দেয়। একটি গণকবর সংস্কারের অভাবে অরক্ষিত হয়ে পড়ে আছে। অপর একটি গণকবর পাকা করা হয়েছে। [আহম্মেদ শরীফ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড