পরশুরাম হাইস্কুল গণহত্যা (পরশুরাম, ফেনী)
পরশুরাম হাইস্কুল গণহত্যা (পরশুরাম, ফেনী) সংঘটিত হয় ১৩ই জুলাই ও ১২ই আগস্ট। এতে বহু সাধারণ মানুষ নিহত হয়।
মুক্তিযুদ্ধে ফেনীর ইতিহাসে পরশুরাম উপজেলার পরশুরাম হাইস্কুল গণহত্যা এক মর্মান্তিক ঘটনা। ১৩ই জুলাই বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকারআলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরা পাকবাহিনীর মেজর ইফতেখারের নেতৃত্বে ও স্থানীয় শান্তিকমিটির সক্রিয় সহযোগিতায় উত্তর গুতমা চৌধুরী বাড়ির বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজবাহ উদ্দীন আহম্মদ চৌধুরী (মিহির), তাঁর পিতা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী ও তাঁদের বর্গাচাষী শুক্কুর মিয়াসহ বেশ কয়েকজনকে ধরে পরশুরাম হাইস্কুলের বন্দিশিবিরে এনে আটকে রেখে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১২ই আগস্ট তারা মুক্তিযোদ্ধা মেজর মীর হোসেন, এসপি শফিকুল হোসেন চৌধুরীর ভাই রফিকুল হোসেন চৌধুরী ও সিরাজুল হোসেন চৌধুরীকে স্থানীয় বাজার থেকে ধরে এনে পরশুরাম হাইস্কুল বন্দিশিবিরে আটকে রাখে। এরপর নির্মম নির্যাতন শেষে গুলি করে তাদের হত্যা করে। একইভাবে শালিয়া গ্রামের বড়পুকুর পাড়ে পূর্ব অনন্তপুরের পণ্ডিত অধর বাবু এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন দিনমজুরকে ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা পরশুরাম থানা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আমিনুল করিম মজুমদার (খোকা মিয়া)-এর শালিয়াস্থ গ্রামের বাড়ি এবং কোলাপাড়া গ্রামের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আনোয়ারুল হকের বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁদের না পেয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। একই দিন তারা উত্তর শনিয়া মজুমদার বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে সব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়। [মো. ফখরুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড