নীলফামারী ডাকবাংলো বধ্যভূমি (নীলফামারী সদর)
নীলফামারী ডাকবাংলো বধ্যভূমি (নীলফামারী সদর) নীলফামারী শহরের চৌরঙ্গী ও পাঁচমাথা মোড়ের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। ২৩শে মার্চ এ বধ্যভূমিতে গণহত্যা শুরু হয় এবং ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। নীলফামারী জেলা সদরের দায়িত্বে নিয়োজিত ক্যাপ্টেন আল্লারাক্ষা খানের আবাসিক এলাকা ভকেশনাল ইনস্টিটিউট টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার হতো। পাকসেনারা বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা ব্যক্তিদের অত্যাচারের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করত। কাউকে হত্যা করার আগে এ টর্চার সেলে কয়েক দিন বন্দি করে রাখত। এরপর ডাকবাংলাতে নিয়ে হত্যা করা হতো। নীলফামারী ডাকবাংলো বধ্যভূমিতে যাদের হত্যা করা হয়, তাদের কয়েকজন হলো- ঘীনা সাহা (বিশিষ্ট সমাজসেবী ও কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান; ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করায় এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পাকসেনারা তাকে ডাকবাংলোতে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে), খগেশ্বর বর্মণ (কলোনি হিন্দুপাড়া, পলাশবাড়ি), ঝড়িয়া বর্মণ (কলোনি হিন্দুপাড়া, পলাশবাড়ি), খর্গ নারায়ণ (কলোনি হিন্দুপাড়া, পলাশবাড়ি), সারদা কৈ (কলোনি হিন্দুপাড়া, পলাশবাড়ি)। পলাশবাড়ি হিন্দুপাড়ায় শান্তি কমিটির মিটিংয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত না থাকায় তাদেরকে পাকসেনারা নীলফামারী ডাকবাংলোতে নিয়ে হত্যা করে। নীলফামারী সদরে পাকসেনাদের গণহত্যায় যারা সহায়তা দেয় তাদের মধ্যে- আব্দুল্লাহ, তয়ব আলী খান, এডভোকেট আব্দুল লতিফ, কাওছার বিহারি, মজিদ বিহারি ও তার ছেলেরা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ডাকবাংলোর কাছে কানিয়াল খাতা রাস্তার পাশে ঘীনা সাহার স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। [আহম্মেদ শরীফ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড