You dont have javascript enabled! Please enable it! নিজকুঞ্জরা-আলোকদিয়া গণহত্যা (ছাগলনাইয়া, ফেনী) - সংগ্রামের নোটবুক

নিজকুঞ্জরা-আলোকদিয়া গণহত্যা (ছাগলনাইয়া, ফেনী)

নিজকুঞ্জরা-আলোকদিয়া গণহত্যা (ছাগলনাইয়া, ফেনী) সংঘটিত হয় ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহে (সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি)। এতে শতাধিক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। ঘটনার দিন ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলাধীন নিজকুঞ্জরা ও আলোকদিয়া গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এক নির্মম গণহত্যা চালায়। হানাদার বাহিনী ফেনী নদীর উত্তর পাশ দিয়ে এসে আলোকদিয়া ও নিজকুঞ্জরা গ্রাম ঘিরে ফেলে। এরপর বাড়িঘরে ঢুকে শতাধিক লোক ধরে তেমুহনীতে নিয়ে আসে। সেখানে তাদের গুলি করে হত্যার পর পাশের ডোবায় ফেলে দেয়। নিজকুঞ্জরা ও আলোকদিয়া গণহত্যায় নিহত যাদের নাম জানা গেছে, তারা হলেন- হোসেন আহম্মদ মিস্ত্রি (৭৫), সুলতান মোহাম্মদ মিস্ত্রি (৬৪), দেলোয়ার হোসেন (৬৫) (কৃষক), আবুল খায়ের (৭০) (কৃষক), ফরিদুর রহমান (৬০) (মিজিবাড়ি, জাহাজে চাকরি করতেন), ওবায়দুল হক (৪০) (সারেং বাড়ি, কৃষক), আহম্মদের মাতা (৮০) (কাজী বাড়ি), তফজল হক (৬০) (কৃষক), আলী আহম্মদ (৩৫) (কৃষক), আহম্মদ হোসেন কানু মিয়া (৭০) (প্রাক্তন চেয়ারম্যান, ১০ নং গোপাল ইউনিয়ন), ভুলু চৌকিদার (৩৫) (কৃষক), ফকির আহম্মদ (৪০) (কৃষক), কুনু মিয়া (৪৫) (কৃষক), সুলতান আহম্মদ (৩৫) (পিতা বাদশা মিয়া, কৃষক), লাতু মিয়া (২৭), ইমাম উদ্দিন (১৭) (এসএসসি পরীক্ষার্থী), মৌলভী ওবায়দুল হক (৬৫) (আলোকদিয়া), মনির আহম্মদ কৃষক, আলোকদিয়া, মিজিবাড়ি), আমিন শরীফ (৫৫) (কৃষক), নুরুল আফসার (৫৫) (চাকরিজীবী), ননা মিয়া (৫৫) (মিজিবাড়ি, কৃষক), জহুরুল হক (৫০) (আলোকদিয়া সওদাগর বাড়ি, ব্যবসায়ী), সিরাজ মিয়া (৪৫) (পিতা হক সাব, আলোকদিয়া), সিরাজ মিয়ার বোন, সৈয়দ (বড় মাঝিবাড়ি, কৃষক), মো. সুলতান (আলোকদিয়া), মো. সুলতানের বোন, মির হোসেন (নজির হাজীবাড়ি, কৃষক), নজির আহম্মদ (সারেং বাড়ি, জাহাজে চাকরি করতেন), বাদশা মিয়া (৪০) (খুরশীদ মেম্বারের বাড়ি, আলোকদিয়া, পুলিশ সদস্য), মুন্সী মিয়া (৪২) (ফকির বাড়ি, আলোকাদিয়া), রাজা মিয়া (৪০) (ঘোপাল, নিজকুঞ্জরা গ্রামে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন), আবুল খায়ের (৪৫) (আবদুল্লা মাস্টার বাড়ি, কৃষক), হারেছ আহম্মদ (মিস্ত্রি) (নিজকুঞ্জরা আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন), মুজিবল হক (৪০) (পিতা আবদুর রহমান মাঝি, মাঝিবাড়ি; কৃষক), নুর ইসলাম কালু (৪৫) (পিতা ইউছুপ আলী, মাঝিবাড়ি; চাকরিজীবী), ছালেহ আহম্মদ (৪০) (পিতা আবদুল ওহাব মিস্ত্রি, মুন্সীবাড়ি), রুহুল আমিন (৪১) (পূর্ব চৌকিদার বাড়ি, নিজকুঞ্জরা), আবদুল মান্নান (৪০) (পচনভূঞা বাড়ি, নিজকুঞ্জরা), সিদ্দিক আহম্মদ (৪০) (নিজকুঞ্জরা), বশির আহম্মদ (৪৫) (পিতা জালাল আহম্মদ, আলোকদিয়া) ও আব্দুল বশর (৪৩) (বড়বাড়ি, নিজকুঞ্জরা)। এ গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে এখন পর্যন্ত কোনো স্মৃতিচিহ্ন বা স্মৃতিফলক নির্মিত হয়নি। [মো. ফখরুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড