You dont have javascript enabled! Please enable it!

নিলুয়া যুদ্ধ (দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ)

নিলুয়া যুদ্ধ (দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৪ই ডিসেম্বর। এতে ২ জন পাকসেনা আহত হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যায়।
মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসে পাকহানাদারদের গুলি ও রসদ ফুরিয়ে গেলে তারা সমস্যায় পড়ে যায়। ৩রা ডিসেম্বর পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান সীমান্তবর্তী ভারতীয় বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়। ফলে মিত্রবাহিনী- হিসেবে ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে একত্রিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৩রা ডিসেম্বর থেকে ১২ই ডিসেম্বর পর্যন্ত মিত্রবাহিনীর আক্রমণে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর ও দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকার পাকসেনাদের ক্যাম্প-ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া কামান ইত্যাদি লণ্ড-ভণ্ড হয়ে যায়। এতে কয়েক শত পাকসেনা নিহত হয়। বাকিরা সেনা ছাউনি থেকে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যাত্ৰা শুরু করে। জামালপুর থেকে পাকসেনারা ভিন্ন-ভিন্ন পথে পায়ে হেঁটে পালাতে থাকে। তাদের মধ্যে অনেকে ইউনিফর্ম পরিবর্তন করে ছদ্মবেশে ঢাকায় পাড়ি জমায়। ১৪ই ডিসেম্বর ১৮০ জনের মতো পাকসেনার একটি সশস্ত্র দল টাঙ্গাইল হয়ে নাগরপুর থানার দক্ষিণে শতগাছা ধুবড়িয়ার ফসলের মাঠ হয়ে দৌলতপুর থানার ওপর দিয়ে পায়ে হেঁটে মানিকগঞ্জ মহকুমার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তারা দৌলতপুর থানার নিলুয়া গ্রামের কাছাকাছি পৌছলে <বিএলএফ কমান্ডার মনসুর আলমের নেতৃত্বে ২৫ জনের অধিক মুক্তিযোদ্ধার একটি দল তাদের ওপর আক্রমণ করে। পাকসেনারাও প্রাণ রক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এরপর তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে ঘিওর থানার পেঁচারকান্দার রাস্তায় গিয়ে ওঠে এবং পুনরায় সমবেত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা সামনে অগ্রসর হয়ে নদীর এপার থেকে গুলি চালাতে থাকে। পাকসেনারাও পাল্টা গুলি চালায় এবং সামনে অগ্রসর হয়। ত্বরাঘাট (ঘিওর) পর্যন্ত পাকসেনা ও মুক্তিসেনাদের মধ্যে ১০ বারের মতো গুলি বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে পাকসেনারা মানিকগঞ্জ পৌঁছে যায়। এ-যুদ্ধে দুজন পাকসেনা আহত হয়। [মো. আমিনুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!