You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.15 | নারায়ণগঞ্জ বন্দর পাকক্যাম্প অপারেশন (নারায়ণগঞ্জ সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

নারায়ণগঞ্জ বন্দর পাকক্যাম্প অপারেশন (নারায়ণগঞ্জ সদর)

নারায়ণগঞ্জ বন্দর পাকক্যাম্প অপারেশন (নারায়ণগঞ্জ সদর) পরিচালিত হয় ১৫ই ডিসেম্বর। এ উদ্দেশ্যে ১১ই ডিসেম্বর মেজর নরেন্দ্র প্রসাদ সিং ও ক্যাপ্টেন শিশুদিয়ার নেতৃত্বে মিত্রবাহিনীর একটি দল হেলিকপ্টারে করে সোনারগাঁর বৈদ্যেরবাজারে আসে। ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার আগে থেকেই তাঁদের অভ্যর্থনা জানানো এবং আশ্রয় ও সহযোগিতা প্রদানের ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের গ্রুপ কমান্ডার মো. গিয়াসউদ্দিন (নারায়ণগঞ্জ)-কে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করেন। তাঁর নির্দেশে বন্দরের সহকারী গ্রুপ কমান্ডার মো. নুরুজ্জামান সোনারগাঁর বৈদ্যেরবাজার এলাকায় তাঁদের অভ্যর্থনা জানান এবং তাঁবু খাটিয়ে ক্যাম্প ও বাঙ্কার তৈরি করে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করেন। অপারেশনের সুবিধার্থে ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম পাড়ে কাইক্কারটেকে মিত্রবাহিনীর একটি জোনাল অফিস স্থাপন করা হয় এবং তাঁদের অনুরোধে কমান্ডার মো. নুরুজ্জামান কাইক্কারটেক ও বন্দর এলাকায় কার্য্য ঘোষণা করেন। অপারেশনের পূর্বে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী যৌথভাবে পাকবাহিনীর ক্যাম্প রেকি করে। রেকি করার পর তারা সিগন্যাল অপারেটর কোডে সঙ্কেতের মাধ্যমে মিত্রবাহিনীর জোনাল অফিসকে পাকবাহিনীর অবস্থান সম্পর্কে অবগত করেন। ঘটনার দিন মিত্রবাহিনীর আরো কয়েকজন সদস্য হেলিকপ্টারে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। এ অপারেশনে নারায়ণগঞ্জের গ্রুপ কমান্ডার মো. গিয়াসউদ্দিনের গ্রুপ, বন্দরের সহকারী গ্রুপ কমান্ডার মো. নুরুজ্জামান, দাউদকান্দির কাউসার, কুতুব ও সাহাবুদ্দীন খানসহ ৫৫ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং জালালউদ্দীন রুমী ও নাজিমউদ্দীন মাহমুদ যোগ দেন। মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী বন্দরের নবীগঞ্জ রেললাইন ধরে পায়ে হেঁটে বন্দরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। রাত ৯টার দিকে হঠাৎ একটা গুলি এসে মিত্রবাহিনীর সদস্য নাইয়ারের শরীরে বিদ্ধ হলে তিনি সঙ্গে-সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং শহীদ হন। এমতাবস্থায় কমান্ডার মো. গিয়াসউদ্দিন সকলকে মাটিতে শুয়ে পড়ার নির্দেশ দেন। এরপর সকাল ৮টা পর্যন্ত উভয় পক্ষে গোলাগুলি চলে। এক পর্যায়ে পাকবাহিনী পালিয়ে যায় এবং যৌথবাহিনী তাদের ঘাঁটি দখল করে। এ-যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর ১১ জন সৈন্য শহীদ এবং ২৫ জন আহত হন। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে দাউদকান্দির মো. নুরুজ্জামান, কাউসার ও জামাল আহত হন। [রীতা ভৌমিক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড