You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.17 | নাড়ীবাড়ি গণহত্যা (গুরুদাসপুর, নাটোর) - সংগ্রামের নোটবুক

নাড়ীবাড়ি গণহত্যা (গুরুদাসপুর, নাটোর)

নাড়ীবাড়ি গণহত্যা (গুরুদাসপুর, নাটোর) সংঘটিত হয় ১৭ই এপ্রিল। এতে ৩৭ জন গ্রামবাসী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দালালদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। নিহতদের ৩টি স্থানে গণকবর দেয়া হয়। এর একটিতে ১৭ জন, আর একটিতে ৯ জন এবং তৃতীয়টিতে ১১ জন।
গুরুদাসপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে নাড়ীবাড়ি অবস্থিত। এলাকাটি ছিল হিন্দু অধ্যুষিত। ১৭ই এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে নিয়ে দালালরাজাকাররা উত্তর নাড়ীবাড়ি আক্রমণ করে। হানাদারদের সহযোগীদের মধ্যে ছিল তারা (গুরুদাসপুর), আব্দুল জলিল, আবুল কাশেম মোল্লা, ইয়ার উদ্দিন, মোন্তাজ বিহারী প্রমুখ।
প্রথমে তারা ডা. মণীন্দ্রনাথ সরকারের বাড়িতে আক্রমণ করে। এতে ডা. মণীন্দ্রনাথ, তাঁর পুত্র নীলরতন, প্রতিবেশী নবরাম ও দিলীপ কুমার ঘটনাস্থলে নিহত হন। এরপর হানাদাররা আশপাশের বাড়িগুলো থেকে সকল পুরুষকে একে-একে বাইরে বের করে আনে। তাদের ১৭ জনকে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। এদিন পাকিস্ত ানি হানাদার বাহিনী মোট ৩৭ জনকে হত্যা করে। এদিনের হত্যাকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে যাদের নাম-পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন- ডা. মণীন্দ্রনাথ সরকার (উত্তর নাড়ীবাড়ি), তাঁর পুত্র নীলরতন সরকার (স্কুল শিক্ষক), নবরাম (উত্তর নাড়ীবাড়ি), দিলীপ কুমার (উত্তর নাড়ীবাড়ি), সীতানাথ হালদার (ব্যবসায়ী) ও তার সহোদর বলরাম হালদার (পিতা হারান হালদার, উত্তর নাড়ীবাড়ি; মৎস্যজীবী), নবরাম মজুমদার (পিতা বলরাম মজুমদার, উত্তর নাড়ীবাড়ি; স্কুলের প্রধান শিক্ষক), সুধীর চন্দ্র হালদার (পিতা রামরূপ হালদার; বিড়ির ব্যবসায়ী), সুবোধ চন্দ্র হালদার (স্কুল ছাত্র), দিলীপ কুমার সরদার (পিতা সুধীর চন্দ্র সরদার; ইপিসিএস পাস), সুরেশ চন্দ্র মালাকার (পিতা জগবন্ধু মালাকার, উত্তর নাড়ীবাড়ি), মানিক চন্দ্র মালাকার (পিতা সুরেশ চন্দ্র মালাকার; প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক), বিষ্টপদ ঘোষ (উত্তর নারীবাড়ি; দই-ছানার ব্যবসায়ী), যদুনাথ কর্মকার (পিতা সুকচরণ কর্মকার; গুরুদাসপুর; হোমিও ডাক্তার), দুখু রাম হালদার (পিতা রামলাল হালদার, উত্তর নাড়ীবাড়ি), দুলাল মালাকার (পিতা রবীন্দ্রনাথ মালাকার, উত্তর নাড়ীবাড়ি), দুলালের কাকা গেদু মালাকার (পিতা বিজয় চন্দ্র মালাকার, উত্তর নাড়ীবাড়ি), বাদল চৌধুরী (পিতা কোমদ নাথ চৌধুরী, উত্তর নাড়ীবাড়ি), কালাম ও গোপীনাথ। গুরুদাসপুর নাড়ীবাড়ি গণহত্যায় ১১ শহীদের গণকবর ও স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। [সুমা কর্মকার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড