নাপোড়া গণহত্যা (বাঁশখালী, চট্টগ্রাম)
নাপোড়া গণহত্যা (বাঁশখালী, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ৭ই সেপ্টেম্বর। এ গণহত্যায় ১৭ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন। ৭ই সেপ্টেম্বর পাকবাহিনী বাঁশখালীতে দ্বিতীয়বারের মতো প্রবেশ করে এবং গুনাগরীতে ক্যাম্প স্থাপন করে ৩০শে অক্টোবর পর্যন্ত অবস্থান করে। এ-সময় তারা জলদী, শীলকুপ, চাম্বল, শেখেরখীল ও নাপোড়ার হিন্দু-মুসলিম বসতিপূর্ণ এলাকায় নিষ্ঠুর গণহত্যা ও নারীনির্যাতন চালায় এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে। নাপোড়ার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মন্দির ও দালানগুলো তারা ধ্বংস করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্থানীয় রাজাকার, আলবদর ও শান্তি কমিটির সদস্যদের সহযোগিতায় ৭ই সেপ্টেম্বর গুনাগরী থেকে নাপোড়া পর্যন্ত আক্রমণ করে। পাকসেনাদের আক্রমণে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পলায়নরত নিরীহ মানুষজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ-সময় নাপোড়া গ্রামে তাদের গণহত্যার শিকার হন ১৭ জন নিরীহ মানুষ। আক্রমণ শেষ করে হানাদাররা গুনাগরী এসে ঘাঁটি স্থাপন করে।
নাপোড়া গণহত্যায় শহীদ ১৭ জনের মধ্যে ১৪ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- নাপোড়া গ্রামের রাধিকা সিকদার (পিতা মুকুন্দ মোহন সিকদার), রাজেন্দ্র গুহ (পিতা রাজ কুমার গুহ), দীনবন্ধু গুহ (পিতা কৈলাশ চন্দ্র গুহ), ব্রজেন্দ্র গুহ (পিতা নগেন্দ্র গুহ), হরেন্দ্র গুহ (পিতা শরৎ চন্দ্র গুহ), জীবন কৃষ্ণ দেব (পিতা মনমোহন দেব), নগন্দ্রে লাল দেব (পিতা তারা কিংকর দেব), মণীন্দ্র লাল দেব (পিতা তারা কিংকর দেব), কানন প্রভা দাশ (পিতা বিনোদ বিহারী দাশ), নকুল চন্দ্র পাল (পিতা নবীন চন্দ্র পাল), বাসন্তী দে (পিতা হরেন্দ্র দে), জ্ঞানেন্দ্র দেব (পিতা রসিক চন্দ্র দেব), ফণীন্দ্র মালাকার (পিতা উপন্দ্রে মালাকার) ও রমণী মোহন পাল (পিতা রাম নারায়ণ পাল)। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড