You dont have javascript enabled! Please enable it!

নাপিতের ঘাটা যুদ্ধ (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম)

নাপিতের ঘাটা যুদ্ধ (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ৩০শে অক্টোবর। এতে ৮ জন রাজাকার নিহত হয়, ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে এবং বাকিরা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ১৩টি অস্ত্র হস্তগত করেন।
নাপিতের ঘাটা এলাকাটি বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল গ্রামের উত্তর পাড়া ও দক্ষিণ পাড়ার মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। এখানে রাজাকারদের ক্যাম্প ছিল। বোয়ালখালী সদর উপজেলা থেকে এর দূরত্ব এক কিলোমিটার। এ ক্যাম্প থেকে রাজাকাররা উপজেলার আশপাশের গ্রামে হানা দিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিত এবং ছাত্র-যুবকদের ধরে ক্যাম্পে নিয়ে আসত। মুক্তিযোদ্ধারা এর প্রতিকারের জন্য রাজাকার ক্যাম্প অপারেশনের পরিকল্পনা করেন।
অক্টোবর মাসে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বোয়ালখালী আসেন কমান্ডার সোলায়মান, আব্দুল কাদের ও বনগোপালসহ ১৫ জনের একটি প্রশিক্ষিত গ্রুপ। তঁরা যুক্ত হন স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষিত আরো ১২ জন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন করিম ক্যাপ্টেন করিম গ্রুপ ও সোলায়মান গ্রুপ মুক্তিযোদ্ধাদের মূল আশ্রয়স্থল জৈষ্ঠ্যপুরা সেনবাড়িতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন যৌথভাবে কধুরখীল নাপিতের ঘাটা এলাকায় রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন করবেন। কৌশলগত কারণে মুক্তিযোদ্ধারা এ জায়গাটি বেছে নেন। মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে একটি গ্রুপ বিশ্বাস বাড়ি, একটি গ্রুপ নাপিতের ঘাটা (বাড়ি ঢোকার সরু রাস্তা) এবং অন্য একটি গ্রুপ ইমাম নগরে অবস্থান নেয়।
২৯শে অক্টোবর ভোর ৪টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা নাপিতের ঘাটা অপারেশন স্থলে পজিশন নেন। ৩০শে অক্টোবর ভোরে ২০-২৫ জন রাজাকারের একটি দল কধুরখীল গ্রামে প্রবেশ করে। নাপিতের ঘাটা এলাকায় পৌঁছামাত্র মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করেন। ২ ঘণ্টার অধিক সময়ব্যাপী উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে ৮ জন রাজাকার নিহত এবং ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে। বাকিরা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা ১৩টি অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হন। [উদয়ন নাগ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!