You dont have javascript enabled! Please enable it! নাজিরপুর নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বধ্যভূমি (পাবনা সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

নাজিরপুর নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বধ্যভূমি (পাবনা সদর)

নাজিরপুর নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বধ্যভূমি (পাবনা সদর) পাবনা সদর উপজেলায় অবস্থিত। সদর সংলগ্ন এ স্থানে মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে গর্তে ফেলে রাখে। এ বধ্যভূমিতে কতজনকে হত্যা করা হয় তার সঠিক পরিসংখ্যান কারো জানা নেই। শুধু একদিনেই ৬৮ জন লোককে এখানে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
বর্তমান নাজিরপুর নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০ গজ পশ্চিমে হেদারদহ বা যন্ত্রপাড়া মোড় (বর্তমান রানা প্লাজা)-এর উত্তর পাশে ছিল বিশাল একটি গর্ত। এ গর্তে পাকহানাদার ও তাদের দোসররা ৭১-এ এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অগণিত মানুষকে হত্যা করে ফেলে রাখে। নিরীহ মানুষকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে জীবন্ত মাটিচাপা দিত। হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও নাজিরপুর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম হাবুর বাড়ি ছিল মুক্তিযোদ্ধদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। তাঁর বাড়িতেই মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নিতেন। নাজিরপুর গ্রামে <মুক্তিবাহিনী-র সংখ্যা বেশি হওয়ায় এখানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের মাত্রাও ছিল বেশি। এ বধ্যভূমিতে কত লোককে হত্যা করা হয়, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে একদিনেই ৬৮ জন লোককে এখানে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে স্বজনরা পরিচিতদের সমাহিত করলেও অনেক লাশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত শেয়াল- কুকুরের আহারে পরিণত হয়। পাকবাহিনীর নির্যাতন থেকে মহিলারাও রক্ষা পায়নি। এ বধ্যভূমিতে শহীদ কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন— হেমায়েতপুর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের আলী প্রামাণিক (পিতা বাছের প্রামাণিক), লোকমান সরদার (পিতা ফরমাল সরদার), রব্বেল সরদার, মোয়াজ্জেম হোসেন (পিতা মোসলেম উদ্দিন), পচা প্রামাণিক (পিতা শাহেদ প্রামাণিক), পাঞ্জাব আলী (পিতা পচা প্রামাণিক), খইরুদ্দিন প্রামাণিক (পিতা কফিল প্রামাণিক), মালু প্রামাণিক (পিতা ফালু প্রামাণিক), কুলুমদ্দিন প্রামাণিক (পিতা বরু প্রামাণিক), আব্বাস আলী (পিতা কুলুমদ্দিন প্রামাণিক), খোরসেদ আলী (পিতা জানা প্ৰামাণিক), আমিমুদ্দিন প্রামাণিক (পিতা সিরাজুল প্রামাণিক), ছামেদ প্রামাণিক (পিতা কছির প্রামাণিক), আসলাম প্রামাণিক (পিতা সোবাহান প্রামাণিক), ইউনুস আলী (পিতা গুপি প্রামাণিক), রহমত বিশ্বাস (পিতা অহেদ আলী প্রামাণিক), চাঁদ আলী (পিতা তাহানা ঠাকুর), আহম্মদ আলী প্রামাণিক (পিতা নাদু প্রামাণিক), ছুরাপ আলী প্ৰামাণিক (পিতা নাদু প্রামাণিক) ও হিরাই প্রামাণিক (পিতা নাদু প্রামাণিক)। [মো. ছাবেদ আলী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড