You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে নাঙ্গলকোট উপজেলা (কুমিল্লা)

নাঙ্গলকোট উপজেলা (কুমিল্লা) মুক্তিযুদ্ধের সময় থানা ছিল না। ১৯৭৯ সালে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও লাকসাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে নাঙ্গলকোট থানা গঠিত হয়। ১৯৮২ সালে এটি উপজেলা হিসেবে ঘোষিত হয়।
কুমিল্লা জেলা রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায় এখানকার জনগণ বরাবরই রাজনীতিসচেতন ছিল। জাতীয় বিভিন্ন অন্দোলন-সংগ্রামে তারা সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। ১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনেও তারা দেশপ্রেমের পরিচয় দেয়। ফলে কুমিল্লার উভয় পরিষদের সবকটি আসনে আওয়ামী লীগ- প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। এ বিজয়ের অংশীদার ছিল নাঙ্গলকোট উপজেলার জনগণও।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সারা দেশে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তাই তিনিই হবেন পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী এ ধারণা সকল বাঙালির মতো নাঙ্গলকোটবাসীরাও পোষণ করেছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও পশ্চিম পাকিস্তানের পিপিপি নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধু তথা আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ অসহযোগ আন্দোলন-এর ডাক দেন। নাঙ্গলকোটের মানুষ সে আন্দোলনে সর্বাত্মকভাবে অংশগ্রহণ করে এবং বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ- শুনে তারা মুক্তিযুদ্ধের জন্য তৈরি হয়৷
২৫শে মার্চ রাতে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ড শুরু হলে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই দেশব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। কিন্তু প্রশিক্ষিত পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হলে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন ছিল। স্থানীয়ভাবে সে সুযোগ না থাকায় নাঙ্গলকোটের মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে যান প্রশিক্ষণের জন্য। নাঙ্গলকোটের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন চৌধুরী (পিতা বজলুর রহমান চৌধুরী, মদনপুর) ভারতের পালাটানায় মেজর দর্শন সিংহের অধীনে ২৩ নং মাউন্টেন ডিভিশন কোম্পানিতে ১লা মে থেকে ৩০ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণশেষে ২৫-৩০ জন সহযোদ্ধাকে নিয়ে দেশে ফেরার সময় জুন মাসে চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারা নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে তাঁদের একটি সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে তাঁদের গাইড আবদুল কাদের ও দুজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরে তিনি ২নং সেক্টর কমান্ডার মেজর হায়দারের অধীনে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রুহুল আমীন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন। নাঙ্গলকোটের বটতলী বাজারে পাকবাহিনীর সঙ্গে এবং ফেনীর দাগুনভূঁইয়ার রাজাপুর বাজারে রাজাকার বাহিনীর সঙ্গে তাঁদের যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে রাজাকার বাহিনী পরাস্ত হয়।
নাঙ্গলকোটের আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসহাক মিয়া (পিতা আবদুল মজিদ, নাঙ্গলকোট) তখন লাকসাম নবাব ফয়জুন্নেছা কলেজের এইচএসসি-র ছাত্র। জুনের মাঝামাঝি সময়ে তিনি প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের আগরতলার কলেজটিলায় যান। সেখানে প্রশিক্ষণ শেষ করে নির্মোহপুর ক্যাম্প থেকে কর্নেল খালেদ মোশারফ, মেজর হায়দার ও ক্যাপ্টেন মাহবুবের নিকট থেকে অস্ত্র নিয়ে কয়েকজন সহযোদ্ধাসহ তিনি দেশে ফেরেন। কিন্তু পেড়িয়া ইউনিয়নের ছেহরিয়া-দৌলতপুর এলাকায় তিনি দুজন সহযোদ্ধা মজিবুল হক ও আবদুল মতিনসহ রাজাকারদের হাতে ধরা পড়েন। তিনি কৌশলে ছাড়া পেয়ে পুনরায় চৌদ্দগ্রামের জঙ্গলপুর হয়ে ভারতে যান। কিন্তু নির্মোহপুর ক্যাম্পে পৌঁছলে কর্নেল খালেদ মোশারফ তাঁকে সন্দেহ করে হত্যার হুমকি দেন। এ খবর পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পে অবস্থানরত আ স ম আবদুর রবের নিকট পৌছলে তাঁর হস্তক্ষেপে তিনি রক্ষা পান। পরে অন্তত ছয় মাস যুদ্ধ করার মতো অস্ত্রশস্ত্রসহ ৯১ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দলের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি দেশে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেন। বর্তমান সদর দক্ষিণ উপজেলার গৈয়ারভাঙ্গার আওড়াতলি নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে তাঁদের একটি সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এতে আবু তাহেরসহ চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়া নাঙ্গলকোটের বটতলী বাজারসহ আরো কয়েকটি স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে তাঁদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়।
চৌদ্দগ্রাম ও লাকসাম উপজেলার নেতৃবৃন্দই প্রধানত নাঙ্গলকোট উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। আর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন রুহুল আমীন ভূঁইয়া।
বঙ্গবন্ধু কর্তৃক অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণার পর থেকেই নাঙ্গলকোট উপজেলার সাধারণ জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্নভাবে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতরোধ গড়ে তোলে। কিন্তু জুন প্রথমদিকে পাকবাহিনী সব প্রতিরোধ ভেঙ্গে বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের পরিকোট ব্রিজসংলগ্ন ভূঁইয়া পুকুরপাড়ে এসে ক্যাম্প স্থাপন করে। এতে নেতৃত্ব দেয় ক্যাপ্টেন গেদ্দরজি, ক্যাপ্টেন জং, শরীফ মোহাম্মদ এবং হানিফ খান। এছাড়া নাঙ্গলকোট সদর (রেলস্টেশন চত্বর) এবং হাসানপুর (রেলস্টেশন চত্বর) এলাকায়ও পাকসেনাদের ক্যাম্প ছিল। নাঙ্গলকোট উপজেলায় পাকসেনাদের প্রধান সহযোগী ছিল গাজীমুড়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মোস্তফা হামিদী (ছারজানিয়া)। এছাড়া মাওলানা মহিন উদ্দিন (মৌকারা), হাফেজ
আহম্মেদ (বান্নঘর), ফুল মিয়া ওরফে ফুলু (বদরপুর)-র নামও উল্লেখযোগ্য। এদের নেতৃত্বে রাজাকার, আলবদর ও শান্তি কমিটি হয়। এলাকায় এ তিন বাহিনীর বেশ তৎপরতা ছিল। মাওলানা মোস্তফা হামিদীর নেতৃত্বে এলাকার মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও নিরীহ লোকজনদের হত্যা এবং তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পাকবাহিনী মোস্তফা হামিদীর অনুগত লোকজন দিয়ে এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও সন্দেহজনক লোকদের ক্যাম্পে ধরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করত। এ সময় মোস্তফা হামিদী প্রধান বিচারকের ভূমিকা পালন করত। বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদ সন্তোষজনক না হলে মোস্তফা হামিদীর উপস্থিতিতেই তাদের হত্যা করা হতো। মোস্তফা হামিদী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাকসেনাদের ক্যাম্পের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকত।
পাকবাহিনী পরিকোট ক্যাম্প থেকে ৭-৮টি আর্টিলারি ও ভারী অস্ত্রশস্ত্রের বিশাল বহর নিয়ে নাঙ্গলকোট, লাকসাম এবং চৌদ্দগ্রামের বৃহত্তর এলাকায় গণহত্যা, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। প্রথমদিকে তাদের ক্যাম্পের আধা কিলোমিটারের মধ্যে কোনো লোক ঢুকতে পারত না। পরিকোট গ্রামসহ আশপাশে তারা প্রায় চারশ বাংকার তৈরি এবং বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে। এলাকাবাসীর বাড়িঘর ভেঙ্গে টিন এনে বাংকারে ব্যবহার করে। রাজাকারদের মাধ্যমে এলাকার গরু-ছাগল ও পুকুরের মাছ ধরে এনে ভুরিভোজন করে। পরিকোট বড়পুকুরপাড়ের আলত আলী মহাজনের বাড়িতে পাকিস্তানি অফিসারদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া ভূঁইয়া পুকুরপাড়ের পূর্ব-দক্ষিণ পাশে একটি ঘরে বসে কখন কোথায় কি অপারেশন চালানো হবে তার নীলনকশা তৈরি করা হতো।
পাকবাহিনী উপজেলার সাতবাড়িয়া বাজার, নাঙ্গলকোট বাজার ও বটতলী বাজারে এবং রায়কোট গ্রামের লুৎফুর রহমানের বাড়ি, কুকুরখীল গ্রামের সিদ্দীক মাস্টারের বাড়ি ও ছুপুয়া গ্রামের মমতাজের বাড়িসহ অসংখ্য বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। এছাড়া তাদের দোসরদের সহযোগিতায় এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও বহু নিরীহ লোককে ক্যাম্পে ধরে এনে কখনো প্রকাশ্যে গুলি করে, আবার কখনো নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। তাদের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন অসংখ্য নারী।
নাঙ্গলকোট উপজেলায় পরিকোট ক্যাম্প ছিল পাকবাহিনীর নির্যাতনকেন্দ্র ও বন্দিশিবির। এখানে এলাকার সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে নির্মম নির্যাতন করা হতো। নির্যাতনের পর সাধারণ লোকদের কাউকে ছেড়ে দেয়া হতো, আবার কাউকে হত্যা করা হতো। বর্তমান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এক রাতে দুজন সহযোদ্ধা মজিবুল হক ও আবদুল মতিনকে নিয়ে পেড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের দৌলতপুর গ্রাম অতিক্রম করার সময় রাজাকারদের হাতে ধরা পড়েন। পাকবাহিনী আসার আগেই মোহাম্মদ ইসহাক কৌশলে পালাতে পারলেও অপর দুজনকে পাকবাহিনী পরিকোট ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ক্যাম্পে নিয়ে তাঁদের নির্মম নির্যাতন করে এবং অস্ত্রের সন্ধান জানতে চায়। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তাঁরা ছুপুয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন (নবাব ফয়জুন্নেছা কলেজের ছাত্রলীগ নেতা)-এর নিকট একটি স্টেনগান জমা আছে বলে জানান। এরপর পাকবাহিনী তাঁদের নির্যাতনের পর ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে গুলি করে হত্যা করে। অতঃপর পাকবাহিনী মমতাজকেও ধরে ফেলে এবং তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেত থেকে একটি স্টেনগান উদ্ধার করে। পরে পাকবাহিনী তাঁকে ক্যাম্পে এনে রশি দিয়ে বেঁধে নির্মম নির্যাতনের পর নদীতে ফেলে হত্যা করে।
২৪শে আগস্ট কোরআন শরীফ পড়া অবস্থায় দৌলখাঁড় গ্রামের সিরাজুল আলম ওরফে আকমত আলী দারোগাকে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে দুদিন পাশবিক নির্যাতন চালায়। ২৬শে আগস্ট হাসানপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন নতুন মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করে তাঁর লাশ মাটিতে পুতে রাখে। পেড়িয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দিন (সাবেক চেয়ারম্যান) ও তাঁর ভাই মফিজুর রহমান এবং বড়স্বাঙ্গিশ্বর গ্রামের সাধনকে পরিকোট ক্যাম্পে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়াও পাকবাহিনী এলাকার আরো অনেককে ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে দেয়, আবার কাউকে নির্যাতনের পর ছেড়ে দেয়।
নাঙ্গলকোট উপজেলায় একটি বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে, সেটি হলো পরিকোট বধ্যভূমি। এখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় বহু লোককে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়।
নাঙ্গলকোট উপজেলার বটতলী বাজারে পাকবাহিনীর সঙ্গে মোশারফ হোসেন চৌধুরী এবং মো. ইসহাক মিয়ার গ্রুপের একটি যুদ্ধ হয়। ২০শে নভেম্বর (১লা শাওয়াল) ঈদের দিন মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয় এক নেতার বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করছিলেন। এ খবর পেয়ে পাকবাহিনী বটতলী বাজারে এসে অবস্থান নেয় এবং দোকান-পাটে লুটতরাজ, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। এ সংবাদ শুনে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের আক্রমণ করেন। পাকবাহিনীও পাল্টা আক্রমণ চালায়। কিছুক্ষণ গোলাগুলির পর পাকবাহিনী পালিয়ে যায়। ১১ই ডিসেম্বর নাঙ্গলকোট সদর, বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের পরিকোট ও হাসানপুর এলাকা থেকে পাকসেনারা বিতাড়িত হয় এবং এদিনই উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়। উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- আশরাফ, বীর বিক্রম- (পিতা নওয়াব আলী, বেরী), বরংগু মিয়া, বীর বিক্রম- (পিতার নাম এয়াকুব আলী ওরফে আকু মিয়া, মোকরা) ও আবুল কালাম, বীর প্রতীক (পিতা মো. ইদ্রিস ভূঁইয়া, ভাদ্রা)।
উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- আলী আশরাফ, বীর বিক্রম (১০ই নভেম্বর পিপুলিয়া-হাজতখোলা যুদ্ধে শহীদ), রংগু মিয়া, বীর বিক্রম (২২শে নভেম্বর বড়খাতা যুদ্ধে), ডা. কলিমুল্লাহ (পিতা মুন্সি আলী মিয়া, হেসাখাল), সিরাজুল ইসলাম (পিতা নোয়াব আলী, বেরী), সিরাজুল হক চৌধুরী (পিতা আমিনুল হক চৌধুরী, পুর্ব বামপাড়া), আবদুল খালেক (পিতা আরব আলী, পৌছইর), চান মিয়া (পিতা সিরাজ মিয়া, আলিয়ারা), জগদীশ চন্দ্র ভৌমিক (পিতা রামচন্দ্র ভৌমিক, তেপৈয়া), হাবিলদার রঙ্গু মিয়া (পিতা এয়াকুব আলী, পৌছইর), আবদুল কাদের (পিতা গোলজার হোসেন, সাতবাড়িয়া; জুন মাসে বেতিয়ারা যুদ্ধে শহীদ), আবদুস সোবহান (পিতা মঞ্জু মিয়া, নারায়ণ বাতুড়া; ঐ), আবদুল ওহাব (পিতা ছালামত উল্লাহ, নারায়ণ বাতুড়া; ঐ), আবদুল মোতালেব (পিতা মুসলিম মিয়া, সাতবাড়িয়া), মজিবুল হক (পিতা মুন্সী ইউনুছ, হেসাখাল), আবদুল মতিন (পিতা সেকান্তর আলী, বাহুড়া), আফতাব উদ্দিন মজুমদার (পিতা আব্বাস উদ্দিন মজুমদার, আঙ্গলখোড়), মমতাজ উদ্দিন (পিতা যৌবন আলী, ছুপুয়া), আলতাফ মিয়া (পিতা ফয়েজ আলী, লাড়ুয়া), নজরুল ইসলাম (পিতা বদু মিয়া ওরফে বসু মিয়া, হাসানপুর), নূরুল ইসলাম (পিতা ছেরা মিয়া, আন্নাপাড়া), আবদুল শুক্কুর (পিতা মো. আবদুল্লাহ, পূজকরা), মো. সামছুল হক (পিতা ওয়াহেদ আলী, পূজকরা), মো. আবু তাহের (পিতা আবদুল গফুর, জোড্ডা; গৈয়ারভাঙ্গার আওড়াতলি যুদ্ধে শহীদ), হারুনুর রশিদ (পিতা ওসমান গণি, পদুয়া; ঐ), রমজান আলী (পিতা ইমান আলী, চৌকুড়ী), মীর হোসেন (পিতা হাজী আতর আলী, দৌলখাঁড়), আকমত আলী (পিতা মেহের আলী, দৌলখাঁড়), বদিউল আলম (পিতা ছোবহান বক্স, সাতবাড়িয়া), আনু মিয়া (পিতা হানু মিয়া, সাতবাড়িয়া), ফয়েজ আহমেদ মজুমদার (পিতা আবদুল লতিফ, সাতবাড়িয়া), মো. মনু মিয়া (পিতা কালা মিয়া, গোরকাটা) এবং মো. আখতারুজ্জামান (পিতা আলতু মিয়া, মদনপুর)।
নাঙ্গলকোট উপজেলা সদরে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ‘প্রত্যয়’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া পরিকোট বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিফলক নির্মিত হয়েছে, যা ২০০০ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া উন্মোচন করেন। [মো. মজিবুর রহমান মোল্লা]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!