নলুয়া-সৈকাদি গণহত্যা (নরসিংদী সদর)
নলুয়া-সৈকাদি গণহত্যা (নরসিংদী সদর) সংঘটিত হয় অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে এবং এতে ১৬ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের (বর্তমানে মৃত খাল) ওপর পাঁচদোনা ব্রিজটি (লোহার পুল) অবস্থিত। এ ব্রিজের ওপর পাকবাহিনীর একটি ক্যাম্প ছিল। নদের পশ্চিম পাড় থেকে পাঁচদোনা মোড় হয়ে পশ্চিম দিকে চলে যাওয়া রাস্তার উত্তর দিকে অবস্থিত নলুয়া, বসন্তপুর ও সৈকাদি গ্রাম। মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনী উভয়ের জন্যই পাঁচদোনা মোড় ছিল ঢাকা-নরসিংদী যাতায়াতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল। এ কারণে পাঁচদোনা দখলে রাখার জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে বারবার যুদ্ধ হয়। পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিহত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তারা নলুয়া ও তার আশপাশের গ্রামগুলোতে নৃশংস নির্যাতন, নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ড চালায়। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাঁচদোনা ব্রিজ থেকে কয়েকজন সৈন্য পাঁচদোনা মোড় থেকে পশ্চিম দিকের রাস্তা ধরে অগ্রসর হয় এবং পাশের নলুয়া ও সৈকাদি গ্রামের ১৬ জন মানুষকে গুলি করে হত্যা করে। শহীদরা হলেন- মো. আ. খালেক মিয়া (পিতা মো. – ফালাইন্যা, নলুয়া), মোসা. আমেনা বেগম (স্বামী মো. চ সোনালী, নলুয়া), মো. জংসর আলী (পিতা মো. আবদুলাহ, ম নলুয়া), মো. আলাউদ্দিন (পিতা মো. ছমির উদ্দিন, সৈকাদি), মো. কালাই হোসেন (পিতা মো. ছমির উদ্দিন, সৈকাদি), মো. মতিন মিয়া (পিতা মো. ছবির উদ্দিন, সৈকাদি), মো. আঞ্জতআলী (পিতা খোদা বক্স, নলুয়া), আ. জব্বার মিয়া (পিতা মো. আশ্রাব আলী, নলুয়া), ফালানী খাতুন (স্বামী আ. জব্বার মিয়া, নলুয়া), মো. ফজর আলী (পিতা বেঙ্গা শেখ, নলুয়া), জায়তুন বেগম (পিতা স্বামী মো. ওহাদ আলী, বসন্তপুর), চিন্তাহরণ বণিক (পিতা বনমালী বণিক, শ্ৰীচন্ডি), আ. রহমান (পিতা সোনালী হাজী, দুন্দুলপাড়া), আছিয়া বেগম (পিতা সোনালী, নলুয়া), ছমির উদ্দিন (পিতা আনছর আলী, নলুয়া), দেওয়ান আলী (সৈকাদি)। [মুহম্মদ ইমাম উদ্দিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড