You dont have javascript enabled! Please enable it!

নশিরপাড়া গণহত্যা (কাহালু, বগুড়া)

নশিরপাড়া গণহত্যা (কাহালু, বগুড়া) সংঘটিত হয় ৮ই মে। এদিন পাকিস্তানি বাহিনী কাহালু উপজেলার নশিরপাড়া গ্রামে আক্রমণ করে বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।
নশিরপাড়া কাহালু রেলস্টেশন থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানকার গণহত্যায় পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী ছিল তাদের স্থানীয় দোসর বিহারি সম্প্রদায়ের লোকজন। বিহারিদের মধ্যে জনাব আলীসহ প্রায় ৫০ জনের একটি বাহিনী ছিল। বিহারি সম্প্রদায়ের মানুষদের স্থানীয় বাঙালিদের ওপর ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ থেকে তারা পাকিস্তানি বাহিনীকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর লেলিয়ে দেয়। কাহালু পৌরসভা থেকে পাকিস্তানি বাহিনী ও বিহারিদের একটি দল সূর্যোদয়ের সময় নশিরপাড়া গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই তারা এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। একই সঙ্গে বিহারিরা গ্রামের মধ্যে ঢুকে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে এবং বহু লোককে ধরে পাকিস্তানি সৈন্যদের কাছে নিয়ে আসে। পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এরপর তারা নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।
নশিরপাড়া গণহত্যায় নিহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন- অশোক প্রামাণিক, রজিব উদ্দীন সরদার (পিতা হামিদ সরদার), নূর উদ্দীন কাজী (পিতা নবায়ু কাজী), নূর উদ্দীন কাজীর স্ত্রী, মিনাকা (পিতা জসীম উদ্দীন প্রামাণিক), রইচ উদ্দীন কাজী (পিতা আছিম উদ্দীন কাজী), আব্দুস সামাদ (পিতা রমজান আলী প্রামাণিক), ছলিম উদ্দীন প্রামাণিক (পিতা বহরউল্লাহ প্রামাণিক), গোলাম উদ্দীন (পিতা নাবুল্লা শেখ), মফিজউদ্দীন কাজী (পিতা ফাজিল কাজী), মফিজউদ্দীনের ২ বছরের মেয়ে, রশিদ আলী ও খোরশেদ আলী (শেখপাড়া), খোসা প্রামাণিক, গোলাম উদ্দিন প্রামাণিক, ছলিমুদ্দি, লফিজ উদ্দিন কাজী, ইসমাইল হোসেন, আজিম উদ্দিন সরদার ও লেবু। পাকিস্তানি বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার পর নিহতদের লাশগুলো তাদের আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসী তিনটি পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে। [আহম্মেদ শরীফ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!