নরিংপুর পাকবাহিনী ক্যাম্প অপারেশন (রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর)
নরিংপুর পাকবাহিনী ক্যাম্প অপারেশন (রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর) পরিচালিত হয় ১৫ জুলাই। এতে শত্রুপক্ষের ৭-৮ জন নিহত এবং তাদের অনেক সামরিক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অপারেশনের আগে মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর জহুরল হক পাঠান ও কলিম উল্লাহ ভূঞা গোপনে নরিংপুর পাকবাহিনী ক্যাম্প রেকি করে আসেন। এ কাজে সহযোগিতা করেন আবদুল মান্নান বিএসসি ও সালেহ আহম্মদ বিএসসি। রেকি শেষে পরিকল্পনা মোতাবেক নরিংপুর ক্যাম্প অপারেশন করার জন্য কলিম উল্লাহ ভূঞা ও সুবেদার রবের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের নরিংপুর বাজারের কাছে পাঠানো হয়। তাঁদের সঙ্গে আরো ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার শহীদ আহমেদ, মো. শাহজাহান-১, মো. শাহজাহান-২, বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, হাফিজুর রহমান মিন্টু (বগৌড়), আলাউদ্দিন, আবদুল লতিফ, গোলাম রব্বানী, নায়েব সুবেদার হারেছ, হাবিলদার রশীদ, ল্যান্স নায়েক সিদ্দিক, হাবিলদার বাশার, হাবিলদার গোলাম মাওলা, আবদুল মতিন পাটোয়ারী, সিপাহি নুরুল ইসলাম, সিপাহি ওলিউল্লাহ, ল্যান্স নায়েক হানিফ প্রমুখ। রাজাকাররা প্রায় প্রতিদিনই নরিংপুর ও চিতোষী (চাঁদপুর) আসা-যাওয়া করত। অপারেশনের দিন পাকসেনা ও রাজাকাররা ঐ পথ দিয়ে যাতায়াত করছিল। মুক্তিযোদ্ধারাও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। পরিস্থিতি যখন অনুকূলে তখনই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুবেদার আলী আকবর পাটোয়ারীর নির্দেশ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা একযোগে অতর্কিতে ফায়ার শুরু করেন। শত্রুবাহিনীর পাল্টা আক্রমণের আগেই ৭-৮ পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। পরবর্তীতে শত্রুবাহিনী পাল্টা গুলিবর্ষণ শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধারা কৌশলগত কারণে নিরাপদ অবস্থান থেকে মাঝে-মধ্যে দু-একটা ফায়ার করতে থাকেন। এদিকে চিতোষী থেকে নতুন করে পাকসেনা ও রাজাকার বাহিনী এসে যোগ দিলে তাদের শক্তি বৃদ্ধি পায়। তখন মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে এলাকা ত্যাগ করেন। এ-যুদ্ধে শত্রুপক্ষের ৭-৮ জন নিহত হওয়া ছাড়াও তাদের অনেক সামরিক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপরদিকে সকল মুক্তিযোদ্ধা অসীম সাহস ও মনোবল নিয়ে যুদ্ধ করে অক্ষত অবস্থায় নিরাপদে নিজ ক্যাম্পে ফিরে যেতে সক্ষম হন। [মো. ফখরুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড