১৪-১৫ এপ্রিল ১৯৭১ঃ বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ- আখাউরা
ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় প্রচণ্ড বিমান হামলার খবর পেয়ে খালেদ মোশাররফ তার বাহিনীকে আখাউরা সরে আসতে বলেন। আখাউরাতে মেজর খালেদ নিজেই একটি বাহিনী নিয়ে গঙ্গাসাগরে অবস্থান করছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি বিশাল দল কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে সড়ক পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হয়। পাকবাহিনী উজানিসার ব্রিজের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের কাছাকাছি এলে সুবেদার আম্বিয়ার মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক আক্রমণ চালায়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর বহু সৈন্য নিহত হয়। পরে উজানিসার ব্রিজে পাক বাহিনী সংঘবদ্ধ হয়ে মর্টার ও আর্টিলারি হামলা শুরু করলে মুক্তিবাহিনী অসহায় হয়ে পড়ে। সুবেদার আম্বিয়া সৈন্য ও গোলাবারুদের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে লোক পাঠান।
আম্বিয়ার প্রতিনিধি সেখানে কাউকে পায়নি কারন সেখানের বাহিনী আখাউরা চলে গিয়েছিল। উজানিশার এর মুক্তিবাহিনী উপায়ন্তর না দেখে আখাউরা চলে যায়। উজানিসারে পাক বাহিনীর যে দলটি আক্রান্ত হয়েছিল তারা গঙ্গাসাগর হয়ে আখাউরাতে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু গঙ্গাসাগর রেল ব্রিজে অবস্থান নিয়েছিলেন ইপিআর হাবিলদার আসদ্দর আলীর দল। পাক বাহিনী ব্রিজের কাছাকাছি পৌছলে হাবিলদার আসদ্দর আলীর ইপিআর প্লাটুনের হামলায় তাদের অনেক হতাহত হয়। পাকবাহিনী তাদের রক্ষায় সেখানে আরও সৈন্য পাঠায়। সেদিন শক্তিশালী পাক বাহিনী গোলন্দাজ সাপোর্টে মুক্তিবাহিনীর উপর হামলা করে। সেখানে এক ব্যাংকারে তারা কয়েকজন মুক্তিবাহিনীর সৈনিক হত্যা করে। রাতে ক্যাপ্টেন সুবিদ আলী ভুইয়া গঙ্গাসাগরে একটি পাক অবস্থানে হামলা করেন। এ আক্রমনে মেজর খালেদ নিজেই মর্টার সেকশন পরিচালনা করেন। এ হামলায় পাক বাহিনীর ৩১ জন মারা যায় আহত হয় ১৫-২০ জন।