ধুলিয়া গণহত্যা (বাউফল, পটুয়াখালী)
ধুলিয়া গণহত্যা (বাউফল, পটুয়াখালী) সংঘটিত হয় ৬ই জুন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বারা সংঘটিত এ গণহত্যায় ১৯ জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
বাউফল উপজেলা সদর থেকে ২২ কিমি দূরত্বে উপজেলার উত্তর সীমান্ত এলাকায় তেতুলিয়া নদীর তীরে ধুলিয়ার অবস্থান। মুক্তিযোদ্ধা আ. বারেক এ গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী। ৬ই জুন ভোররাতে কালিশুরি থেকে পায় হেঁটে হানাদার বাহিনী তাদের দোসর ওয়াজেদ সুফী (৫০) ও লালমিয়া (ধুলিয়া বাজারে হাঁড়ি-পাতিলের দোকানের মালিক)-এর দেখানো পথে ধুলিয়া গ্রামে প্রবেশ করে। এখানে প্রবেশ করে তারা দাস বাড়ির ২ জনকে হত্যা করে। তারা খান বাড়ির আজাহার আলী খান (৩৮)-কে নির্যাতন করে। পরে তারা দাস বাড়িসহ ৭০-৮০টি বাড়িতে লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগ করে। তারা বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে ধুলিয়া নবাব বাড়ির কাচারির সামনের পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে আসে। ক্যাম্পের সামনে লাইনে দাঁড় করিয়ে ১৭ জনকে গুলি করে হত্যা করে। এ গণহত্যায় ১৯ জন মানুষ শহীদ হন, যাদের অধিকাংশই ধুলিয়া ও ঘুচাকাঠী গ্রামের। গণহত্যার স্থান এবং ঘুর্চাকাঠী গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ধুলিয়া গণহত্যায় শহীদ যাদের নাম ও পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন- ধুলিয়া গ্রামের আ. রশিদ মিয়া (পিতা ফয়জন মিয়া), হাসান আলী (৩০) (পিতা রুস্তুম আলী নিকারী; মৎস্য ব্যবসায়ী), আলাউদ্দিন (পিতা কাশেম আলী), আ. আজিজ নিকারী (পিতা হাশেম নিকারী), সিরাজুল হক গাজী (পিতা হোসেন গাজী), বিহারীলাল মিস্ত্রি (পিতা ফটিক চন্দ্র মিস্ত্রি), আবুল হোসেন গাজী (পিতা রত্তন আলী গাজী), ঘুর্চাকাঠী গ্রামের দীনবন্ধু পাইক (পিতা কালু পাইক), আ. গণি হাওলাদার (পিতা মকিম আলী হাওলাদার) ও শশীকান্ত সমাদ্দার (পিতা রামকিশোর সমাদ্দার), চাঁদকাঠি গ্রামের মুনু বাউলী (পিতা আমির আলী বাউলি)। এ গণহত্যায় কাঞ্চন আলী নামে একজন আহত হয়ে বেঁচে যান। তাকে মৃত ভেবে পাকিস্তানি সৈন্যরা ঐ অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। [ইব্রাহীম খলিল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড