ধোপাখালী যুদ্ধ (জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা)
ধোপাখালী যুদ্ধ (জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা) সংঘটিত হয় ৭ই আগস্ট। এতে অনেক পাকসেনা হতাহত হয়। অপরদিকে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
ধোপাখালী যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতৃত্ব দেন সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোস্তাফিজুর রহমান (পরবর্তীকালে জেনারেল ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান)। যুদ্ধের সহ- অধিনায়ক ছিলেন সুবেদার রফিক। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দীন (দৌলৎগঞ্জ, জীবননগর), রেজু, কাশেম, রেজাউল করিম আলো, দর্শনার দুই সহোদর সামাদ ও আক্তারসহ আরো অনেকে অংশ নেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। এক গ্রুপের প্রধান ছিলেন সুবেদার রফিক। এ গ্রুপের দায়িত্ব ছিল ধোপাখালী-জীবননগর রোডে যাতে জীবননগর থেকে পাকসেনারা ঢুকতে না পারে এবং ক্যাম্পে যারা আছে তারা যাতে পিছু হটতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখা। মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছে রাত সাড়ে ১১টায় পজিশন নেন। ১২টার পর তাঁদের শেলিং শুরু হয়। শেলিং শুরুর সঙ্গে-সঙ্গে পাকসেনারা পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের ফায়ারিং তীব্র করেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্বের সংকেত অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা ডিফেন্স থেকে উঠে আসেন। মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে এখানে অনেক পাকসেনা হতাহত হয়। এ-যুদ্ধে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও দুজন আহত হন। শহীদরা হলেন— ইপিআর বাহিনীর সদস্য হাবিলদার আব্দুল গফুর, নায়েক আব্দুর রশিদ (সিলেট), আবু বাকের (যশোর), সিদ্দিক আলী (ঢাকা) ও আব্দুল আজিজ শহীদ হন। ধোপাখালীতে এঁদের সমাধিতে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। আহত দুজন হলেন— যশোরের মো. নুরুল ইসলাম ও কুমিল্লার মো. শফি। [কোরবান আলী মণ্ডল ও আব্দুর রহমান ধূনা]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড