You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.20 | ধামাই চা-বাগান যুদ্ধ (জুড়ী, মৌলভীবাজার) - সংগ্রামের নোটবুক

ধামাই চা-বাগান যুদ্ধ (জুড়ী, মৌলভীবাজার)

ধামাই চা-বাগান যুদ্ধ (জুড়ী, মৌলভীবাজার) সংঘটিত হয় ২০শে জুলাই। এতে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
জুড়ী সাব-সেক্টরের সদর দপ্তরের ২ কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল ধামাই চা-বাগান ক্যাম্প। বড়পুঞ্জি সাব-সেক্টরে পর্যায়ক্রমে কয়েকজন অধিনায়ক দায়িত্ব পালন করেন। লেফটেন্যান্ট এমদাদের অধিনায়কত্বকালে ধামাই চা- বাগান ক্যাম্পে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি কোম্পানি প্রস্তুত করা হয়। ২০শে জুলাই আক্রমণের লক্ষ্য নির্ধারণ করে তাঁরা ১৯শে জুলাই গভীর অরণ্যের ভেতর দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মাখন রুদ্রপাল ধামাই চা- বাগানেরই ছেলে ছিলেন এবং রাস্তাঘাটসহ এ অঞ্চলের সবকিছু তাঁর চেনাজানা হওয়ায় গাইড-কাম সহ-অধিনায়ক হিসেবে তাঁকে সঙ্গে নেন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট এমদাদ।
কুকিরতল সাব-সেক্টর থেকে এটি সন্নিকটে হলেও উক্ত সাব- সেক্টরের সীমানা বিস্তৃত জনপদ নিয়ে গঠিত হওয়ায় ধামাই চা-বাগান পাক হানাদারদের কাছে অনেকটা নিরাপদ ছিল। ফলে বাগানের চা-শ্রমিক ও বস্তির মনিপুরী সম্প্রদায়ের নারীদেরকে পাকহানাদররা তাদের ভোগের সামগ্রীতে পরিণত করে। এসব কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ধামাই চা- বাগান ক্যাম্প আক্রমণ খুব জরুরি হয়ে পড়ে। দীর্ঘ যাত্রাপথ আর ক্লান্তি শেষে মুক্তিযোদ্ধারা গন্তব্যের নিকটে এসে পৌঁছান এবং পাহাড়ের অধিবাসীদের রান্না করা খাবার খেয়ে নেন। পরিকল্পনামতো অধিনায়ক কাট অফ পার্টি গঠন করেন। তাঁরা টেলিফোনের লাইন কেটে দিয়ে ভোররাতে দুদিক থেকে বাগানে আক্রমণ শুরু করেন। পাকহানদাররা মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের মুখে প্রথমে শক্ত প্রতিরোধ তৈরি করলেও পরে তারা ক্যাম্প ছেড়ে জুড়ী সাব-সেক্টরের পথে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এ-যুদ্ধে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। তাঁদের প্রথমে মনিপুরী বস্তিতে এবং পরে বড়পুঞ্জি সাব-সেক্টরে নিয়ে যাওয়া হয়। [হাসনাইন সাজ্জাদী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড