You dont have javascript enabled! Please enable it!

ধুনট থানা গণহত্যা (ধুনট, বগুড়া)

ধুনট থানা গণহত্যা (ধুনট, বগুড়া) সংঘটিত হয় তিনবার ১৯শে এপ্রিল, ২৭শে এপ্রিল ও ৭ই সেপ্টেম্বর। এতে ৬ জন বাঙালি সিপাহি ও ১৭ জন সাধারণ মানুষ মোট ২৩ জন নিহত হন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিল বিহারি মহিউদ্দীন আহম্মদ। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরিরত উল্লাপাড়ার রফিকের ছুটি বাতিল করে কাজে যোগ দেয়ার আদেশ আসার পরও তিনি যোগ না দেয়ায় তাকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিউদ্দীন আহম্মদ গ্রেফতার করতে আসে। রফিক বিপদ বুঝতে পেরে কালু নামে একজন সিপাহিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনার কয়েকদিন পর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল মহিউদ্দীনকে হত্যার জন্য তার বাড়ির জানালা দিয়ে গুলি করে। তার ছেলে তখন ঘুমিয়ে ছিল। গুলিতে তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশের অত্যাচার বহুগুণ বেড়ে যায়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্য মো. খলিলুর রহমান ছুটি শেষ হওয়া সত্ত্বেও কাজে যোগ না দিয়ে চিকাশী ইউনিয়নের গুলাড়তাইর গ্রামে মহিরউদ্দিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। হরিনাথপুর গ্রামের করিম খান এ খবর পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে পৌঁছে দেয়। তাকে খুঁজতে গিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী গ্রামবাসীর ওপর ব্যাপক অত্যাচার করে। পাকসেনারা ধুনটে প্রবেশের পূর্বে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্রের জন্য ধুনট থানা লুট করেন। পাকিস্তানি সেনারা ৭ই এপ্রিল ধুনটে প্রবেশ করার পর থেকেই সেখানে নারীধর্ষণ ও লুটপাটসহ নানা অত্যাচার- নির্যাতন চালাতে থাকে। প্রবেশ করেই তারা পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের উত্তর পাশে এক বাড়ির গৃহবধূকে ধরে নিয়ে গণধর্ষণ করে। পাশবিক নির্যাতনের ফলে তার মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে তাদের লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ চলতে থাকে। ১৯শে এপ্রিল ও ২৭শে এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী ধুনট থানায় আক্রমণ করে ৬ জন বাঙালি সিপাহিকে হত্যা করে। ৭ই সেপ্টেম্বর তারা ১৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে থানার পাশে গণকবর দেয়। [আহম্মেদ শরীফ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!