ধানের গল্পা গণহত্যা (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
ধানের গল্পা গণহত্যা (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় ১৪ই এপ্রিল। এতে ৪০ জন নিরীহ মানুষ হত্যার শিকার হয়।
১৩ই এপ্রিল থেকে পাকবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া দখলের জন্য জল, স্থল ও আকাশ পথে একযোগে আক্রমণ শুরু করে। প্রথমেই তারা আশুগঞ্জ, লালপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানগুলোতে বিমান হামলা চালায়। ১৪ই এপ্রিল হেলিকপ্টারে করে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন ও সোহাগপুর গ্রামের ধানক্ষেতে সৈন্য নামায়। ভৈরব বাজার থেকে বেশকিছু পদাতিক সৈন্য ভৈরব-আশুগঞ্জ রেলসেতুর ওপর দিয়ে অগ্রসর হয়। এছাড়া গানবোটযোগে মেঘনা নদী পার হয়ে বহু পাকিস্তানি সৈন্য আশুগঞ্জ ও লালপুর এলাকায় সমবেত হয়। সোহাগপুর গ্রামে নেমেই তারা নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করে। বাড়িঘর ও বাজারে আগুন লাগিয়ে দেয়। আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশ দিয়ে মেঘনা নদী ঘেঁষে আশুগঞ্জ বিওসি-র পাশে ধানের গল্লায় সাধারণ মানুষের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এ-সময় পাকহানাদাররা ধানের গল্লা এলাকা থেকে ৪০ জন লোককে ধরে এনে নদীর পারে লাইন করে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তারা নিহতদের লাশ মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। সোনারামপুর গ্রামের রাতন সিকদার ছাড়া গণহত্যায় নিহত বাকি সবাই ছিল আশুগঞ্জ এলাকার বাইরের লোক। তাদের অধিকাংশই ছিল ধান ব্যবসায়ী ও ধান কাটার মজুর এবং কিশোরগঞ্জ, নিকলি, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর, কটিয়াদি ও অষ্টগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। [আমির হোসেন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড