You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.22 | ধামকুড়ি গণহত্যা (নওগাঁ সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

ধামকুড়ি গণহত্যা (নওগাঁ সদর)

ধামকুড়ি গণহত্যা (নওগাঁ সদর) সংঘটিত হয় ২২শে এপ্রিল। এতে ৭ জন নিরীহ গ্রামবাসী শহীদ হন।
ধামকুড়ি নওগাঁ সদর থানার অন্তর্গত একটি গ্রাম। সান্তাহারের নিকটবর্তী এর অবস্থান। এ গ্রামে একই দিনে হানাদাররা ৮ জন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ২২শে এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে হানাদার বাহিনী দুদিক থেকে গ্রামটি ঘিরে ফেলে। এরপর গ্রামবাসীকে তারা আত্মসমর্পণ করতে এবং একসঙ্গে লাইনে দাঁড়াতে বলে। পুলিশ ইন্সপেক্টর সামসুদ্দিন সরদার ইউনিফর্ম পরে সাদা পতাকা হাতে নিয়ে লাইনে এসে দাঁড়ান। তাঁর সঙ্গে গ্রামবাসীরাও লাইনে দাঁড়ায়। এরপর শুরু হয় হানাদার বাহিনী কর্তৃক লাইনে দাঁড়ানো মানুষের ওপর গুলিবর্ষণ। ঘটনাস্থলে একই পরিবারের ৪ জনসহ ৭ জন নিহত হন। নিহতরা হচ্ছেন— পুলিশ ইন্সপেক্টর সামসুদ্দিন সরদার, তাঁর ভাই সান্তাহার আজাদ সিনেমা হলের ম্যানেজার নূরুল ইসলাম সরদার, আরেক ভাই নওগাঁ মুকুল প্রেসের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সামাদ, ভাতিজা বুয়েটের শেষ বর্ষের ছাত্র আমিনুল ইসলাম, বিরামপুর কলেজের মেধাবী ছাত্র এনামুল ইসলাম মান্না, সাহেব পালোয়ান এবং শাহাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা বকুলের পিতা ইব্রাহিম খন্দকার। ভাগ্যক্রমে পুলিশ কর্মকর্তা সামসুদ্দিন সরদারের ছেলে সালাউদ্দিন মিন্টু আহত অবস্থায় বেঁচে যায়। হত্যাকাণ্ড শেষে হানাদার বাহিনী গ্রামটিতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। একইদিনে নওগাঁ স্টেডিয়াম মাঠের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত ম্যালেরিয়া নির্মূল অফিসের নিকটবর্তী কদম গাছের নিচে হানাদার সেনা ও অবাঙালিরা মিলে অছির চেয়ারম্যানের পুত্র মন্টু, আব্দুল বারী ও মজিবর রহমানকে হত্যা করে। হত্যার পর তারা লাশগুলো নিকটবর্তী দিঘিতে ফেলে দেয়। [আইয়ুব হোসেন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড