ধর্মতীর্থ গণহত্যা (সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
ধর্মতীর্থ গণহত্যা (সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় ১৮ই অক্টোবর। এতে বহু সাধারণ লোক শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সরাইল উপজেলার ধর্মতীর্থ ঘাট ও তার আশপাশ এলাকায় গণহত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা অগণিত লোককে এখানে হত্যা করে বিলের পানিতে ফেলে দেয়া হয়। এর মধ্যে চুন্টা গ্রামের ২২ জন এবং কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ২৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এখানে নিহত অন্যরা অন্য এলাকার হওয়ায় তাদের পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনার পর বহুদিন পর্যন্ত বিলের পানিতে লাশ ভেসে থাকতে দেখা যায়।
ধর্মতীর্থ গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার কারণগুলো হলো- কুখ্যাত রাজাকার গণী দালালকে হত্যা ও লাশ গুম করা; কালীকচ্ছ গ্রামবাসী কর্তৃক ৬ জন রাজাকারকে হাত-পা বেঁধে নদীতে নিক্ষেপ করা; ২৮শে আগস্ট রাতে মুক্তিবাহিনীর একটি গেরিলাদল কর্তৃক শান্তি কমিটি-র সদস্য বাবর আলী চেয়ারম্যানকে হত্যা করা; সেপ্টেম্বরে চুন্টার সেনবাড়িতে রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ; ৬ই অক্টোবর কালীকচ্ছ-নাসিরনগর রোডে মাইন অপারেশনে দুটি জিপ ধ্বংসের মাধ্যমে একজন পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনসহ কয়েকজন পাকসেনা ও সরাইল শান্তি কমিটির প্রধান মন্নাফ ঠাকুরকে হত্যা করা এবং এর কয়েক দিন পর ধর্মতীর্থ ঘাট থেকে নাসিরনগর যাওয়ার পথে একজন পুলিশ অফিসার, কয়েকজন সেপাই ও রাজাকারসহ নাসিরনগর শান্তি কমিটি ও ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ সওয়াব মিয়া চৌধুরীকে হত্যা করা।
পাকিস্তানি বাহিনী বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে ধরে এনে সরাইল থানা ও কালীকচ্ছ ক্যাম্পে আটক রাখত। কাউকে-কাউকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লায় পাঠিয়ে দিত। অনেককে সঙ্গে-সঙ্গে হত্যা করত। ১৬ই অক্টোবর শনিবার দুপুরে চুন্টা গ্রামে আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা বিভিন্ন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। গ্রামের পরিমল দত্ত, মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন এবং লোপাড়ার বাদশা মিয়ার বাড়ি সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া গ্রামের বহু বাড়িঘরে আগুন লাগায়।
এরই মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে আক্রমণ চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩১ জনকে ধরে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ৮ জন তিনদিন পর বাড়িতে ফিরে আসে। বাকিরা হত্যার শিকার হয়। তাদেরকেসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে নেয়া শতাধিক লোককে ১৮ই অক্টোবর রাতে কালীকচ্ছ গ্রামের উত্তর দিকে ধর্মতীর্থ ঘাটের বিলের পাশে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই স্থানে কালীকচ্ছ ও চুন্টা গ্রামের আরো ৪৯ জনকে হত্যা করা হয়।
ধর্মতীর্থ ঘাটে রাজাকার বাহিনীর চেকপোস্ট ছিল। তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইলসহ আশপাশ এলাকা থেকে নাসিরনগরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌপথ। এ-পথে যাতায়াতের সময় ধর্মতীর্থ ঘাটে রাজাকাররা যাত্রীদের চেক করত। কেউ-কেউ ছাড়া পেত, আবার কেউ-কেউ হত্যার শিকার হতো। এভাবেই রাজাকাররা ধর্মতীর্থ ঘাটে যাত্রীদের হয়রানি, নির্যাতন ও হত্যা করে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা বহু লোককে হত্যা করে বিলের পানিতে ফেলে দেয়া হয়।
চুন্টা সেনবাড়িতে ছিল রাজাকার ক্যাম্প। শান্তি কমিটির আহ্বায়ক টাক্কাবালীর নেতৃত্বে বাড়িটি দখল করে নিয়ে রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। বাড়ির বাসিন্দা প্রায় সকলকেই উচ্ছেদ করা হয়। কাউকে-কাউকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। এই রাজাকার ক্যাম্প থেকেই সারা চুন্টা এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর লুট করা হয়। লুটের সময় যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গ্রামের প্রায় সকল হিন্দু পরিবার সবকিছু ফেলে ভারতে চলে যায়। যারা যেতে পারেনি বা শেষ পর্যন্ত যারা পালিয়ে থেকে গ্রামে অবস্থান করছিল, তাদের মধ্য থেকে ২২ জনকে হত্যা করা হয়। গ্রামের কোনো-কোনো হিন্দু লোক পার্শ্ববর্তী মুসলমান বাড়িতে আশ্রয় নিয়েও বাঁচতে পারেনি।
১৬ই অক্টোবর যখন চুন্টা গ্রামের কেউ পুকুরে গোসল করতে গিয়েছিল, কেউ দুপুরের খাবার খাচ্ছিল, আবার কেউ-কেউ ব্যক্তিগত কাজকর্মে ব্যস্ত ছিল, ঠিক তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা এ গ্রামে আক্রমণ করে। গ্রামের লোকজন তখন ভয়ে পালাতে থাকে। কেউ পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, কেউ দৌড়ে পালিয়ে যায়, আবার কেউ-কেউ বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে বা ঘরের ভেতরে চৌকির নিচে বা ধান রাখার ডোলের ভেতরে লুকিয়ে থেকে প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করে। তবুও তাদের মধ্য থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বহু লোককে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা। এলাকার সাধারণ মানুষ, হিন্দু-মুসলমান মিলিতভাবে তাদের ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করে। শান্তি কমিটির আহ্বায়ক টাক্কাবালীর কাছে ধরনা দেয়। টাক্কাবালী তাদের ছাড়িয়ে আনার আশ্বাস দেয়, কিন্তু ছাড়িয়ে আনা আর হয়নি। আটক গ্রামবাসীকে ছাড়িয়ে আনার কথা বলে রাজাকাররা টাকা- পয়সা হাতিয়ে নেয়। খাবার ও কাপড় সরবরাহের কথা বলেও কেউ-কেউ টাকা নেয়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। ১৮ই অক্টোবর রাতে ধর্মতীর্থ ঘাটে নিয়ে তাদেরসহ বহু লোককে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে চুন্টা গ্রামের কমলা রঞ্জন দেব, লালচান নমঃশূদ্র, ভগীরথ দেবনাথ, হারাধন চন্দ্র বিশ্বাস, কানাইলাল পাল, যামিনী পাল প্রমুখসহ কয়েকজন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। কালীকচ্ছ গ্রামের আনন্দ দাস গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে যান। তার কোমরের সঙ্গে অন্যদের কোমর বাঁধা ছিল। তাই বাঁধন খুলতে না পেরে তিনি পালাতে পারেননি। আহত অবস্থায় গোঙাচ্ছিলেন। পরদিন সকালে বিলের পাড়ের মকসুদ আলী তার গোঙানি শুনে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন। কিন্তু এলাকার রাজাকারদের মাধ্যমে এ খবর জানতে পেরে পাকিস্তানি সৈনিকরা পুনরায় তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে বাড়ির পাশেই জগারপাড় ব্রিজের নিচে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গুলি করে হত্যা করে।
চুন্টার ঘাগরাজোড় মহল্লার অধীরচন্দ্র দে-কে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের পর ছাড়া পেয়ে তিনি বাড়িতে এসে পাঁচ মেয়েকে নিয়ে অন্য গ্রামে চলে যান। এ গ্রামেরই রজনীকান্ত সরকার ও তার ছেলে রণদা সরকারকে ভাত খাওয়া অবস্থায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামের অমরেশচন্দ্র সেন সপরিবারে ভারতে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার বৃদ্ধ পিতা যোগেশচন্দ্র সেন ভারতে যেতে রাজি হননি। বাড়িতেই থেকে যান। তাকেও হত্যা করা হয়। এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী শতাধিক নারী-পুরুষ বেদনার্ত কণ্ঠে গণহত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা করেন।
এলাকার দালাল ও রাজাকারদের মধ্যে যারা এই হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তারা হলো- এমদাদুল হক টাক্কাবালী, সিরাজ মিয়া, কুদ্দুস মিয়া, মাহফুজ মিয়া, মারফত আলী, জবান আলী, জিন্নত আলী, ছিপত খাঁ, আবুল কাশেম, রহিম বক্স, এমাদ আলী, মতি মিয়া, আবু শামা, মহবত আলী, মোহাম্মদ আলী, কাতু মিয়া, বুধাই মিয়া, গুল মোহাম্মদ, রহমত আলী, রেহমান আলী, শাফি মিয়া, মিয়া, আবদুল মোতালিব, সুরুজ মিয়া, শাহজাহান মিয়া, উরন আলী, নূর মিয়া, আবদুস সাত্তার, ছায়েদ আলী প্রমুখ। এছাড়া ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় অর্ধ শতাধিক সদস্য। তাদের মধ্যে ছিল ক্যাপ্টেন জুলফিকার আলী খান ও মেজর আকরাম খান।
ধর্মতীর্থ গণহত্যায় শহীদ, নির্যাতিত ও ভুক্তভোগীদের সংখ্যা সহস্রাধিক। তাদের মধ্যে কারো স্বামী, কারো পিতা, কারো ছেলে, কারো ভাই নৃশংস হত্যার শিকার হন। কেউ-কেউ নিজেরাও নির্যাতিত হন। কালীকচ্ছ গ্রামের শহীদ বীরেন্দ্র চন্দ্র দাসের স্ত্রী স্বামীকে হারিয়ে পাগল হয়ে যান। ঘটনার পর কয়েক বছর পর্যন্ত কেউ-কেউ তাকে পথে-ঘাটে বিলাপ করতে দেখেছে। তারপর তার আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ধর্মতীর্থ গণহত্যায় কালীকচ্ছ ও চুন্টা ইউনিয়নের ৪৯ জনসহ বিভিন্ন এলাকার অগণিত লোক শহীদ হন। তাদের মধ্যে কালীকচ্ছ ও চুন্টা ইউনিয়নের অধিবাসীদের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- নবী হোসেন বক্স (পিতা হামিদ হোসেন বক্স, মণিরবাগ, কালীকচ্ছ; কৃষক), আ. মন্নাফ (পিতা গেদু মিয়া, মণিরবাগ, কালীকচ্ছ; শ্রমিক), রমান উদ্দিন (পিতা আহম্মদ মিয়া, মণিরবাগ, কালীকচ্ছ; শ্রমিক), এলু মিয়া (পিতা সুরত আলী, সূর্যকান্দি, কালীকচ্ছ; কৃষক), সাদেক মিয়া (পিতা জোর আলী মিয়া, কালীকচ্ছ; কৃষক), মন লস্কর (পিতা আশ্রব আলী লস্কর, লস্করপাড়া, কালীকচ্ছ; কৃষক), আব্দুল আলেক (পিতা আব্দুল খালেক, কালীকচ্ছ পূর্ব; কৃষক), দুঃখু মিয়া (পিতা আমজাদ মিয়া, চাকসার পূর্ব, কালীকচ্ছ; শ্রমিক), আবদুল মিজান (পিতা আব্দুল হাশিম, কালীকচ্ছ; কৃষক), প্রাণ লাল চৌধুরী (পিতা গোবর্ধন চৌধুরী, বারুইপাড়া, কালীকচ্ছ; ব্যবসায়ী), বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস (পিতা মহেন্দ্ৰ চন্দ্ৰ দাস, জগারপাড়, কালীকচ্ছ; মৎস্যজীবী), জ্ঞানেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী (পিতা কাশীনাথ চৌধুরী, বারুইপাড়া, কালীকচ্ছ; রাজনীতিবিদ), দিনেশচন্দ্র বিশ্বাস (পিতা আনন্দ চন্দ্র বিশ্বাস, নন্দীপাড়া, কালীকচ্ছ; ব্যবসায়ী), সুরেশ চন্দ্র দাস (পিতা পুলক চন্দ্র দাস, জগাড়পাড়, কালীকচ্ছ; ব্যবসায়ী), আনন্দ চন্দ্র দাস (পিতা হরি সুন্দর দাস, জগারপাড়, কালীকচ্ছ; মৎস্যজীবী), ধরণী দেব (পিতা বলাই সেন, বারুইপাড়া, কালীকচ্ছ; ব্যবসায়ী), জীবেশ বন্ধু চৌধুরী (পিতা গোবিন্দ চৌধুরী, নন্দীপাড়া, কালীকচ্ছ; ব্যবসায়ী), গোপাল চন্দ্র দাস (পিতা রাজেন্দ্র চন্দ্র দাস, বারুইপাড়া, কালীকচ্ছ; শিক্ষক), শম্ভুনাথ সাহা (পিতা রাম গোবিন্দ সাহা, দক্ষিণপাড়া, কালীকচ্ছ; ব্যবসায়ী), প্রাণ কুমার সেন (পিতা হরিবল সেন, বারুইপাড়া, কালীকচ্ছ; ব্যবসায়ী), বিনয় চক্রবর্তী ঠাকুর (পিতা ঠাকুর কাছন গোসাঁই, ধামাইদপাড়া, কালীকচ্ছ; পুজারি), ব্রজেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী (কালীকচ্ছ, ব্যবসায়ী), নীরদ দাস (পিতা নবীন চন্দ্র দাস, জগারপাড়, কালীকচ্ছ; মৎস্যজীবী), প্রাণ কুমার দাস (পিতা কণ্ঠিরাম দাস, জগারপাড়, কালীকচ্ছ; মৎস্যজীবী), ধনঞ্জয় চন্দ্র দাস (পিতা জলধর দাস, জগারপাড়, কালীকচ্ছ; মৎস্যজীবী), উপেন্দ্র চন্দ্র দাস (পিতা নারায়ণ চন্দ্র দাস, জগারপাড়, কালীকচ্ছ; মৎস্যজীবী), শুকলাল মালাকার (পিতা মহানন্দ মালাকার, নন্দীপাড়া, কালীকচ্ছ; শ্রমিক), যোগেশ চন্দ্র সেন (পিতা ভগবান চন্দ্র সেন, চুন্টা; জমিদার), রমণী কান্ত সরকার (পিতা রজনী কান্ত সরকার, চুন্টা; গৃহস্থ), রণধীর সরকার (পিতা রমণী কান্ত সরকার, চুন্টা; ছাত্র), তরণী চন্দ্র ভট্টাচার্য (পিতা সুদর্শন ভট্টাচার্য, চুন্টা; পুজারি), পরেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য (পিতা পীতাম্বর ভট্টাচার্য, চুন্টা; পুজারি), ননী ভূষণ বিশ্বাস (পিতা বরদাচরণ বিশ্বাস, চুন্টা; কৃষক), পরেশ চন্দ্র বিশ্বাস (পিতা ননীভূষণ বিশ্বাস, চুন্টা; ছাত্র), ধীরেশ চন্দ্র বিশ্বাস (পিতা ননীভূষণ বিশ্বাস, চুন্টা; ছাত্র), সোনারচান বিশ্বাস (পিতা লালচান বিশ্বাস, চুন্টা; কৃষক), রূপচান বিশ্বাস (পিতা লালচান বিশ্বাস, চুন্টা; কৃষক), সুকুমার বিশ্বাস (পিতা ভগবান চন্দ্র বিশ্বাস, চুন্টা; কবিরাজ), যতীন্দ্র চন্দ্র দাস (পিতা রাজেন্দ্র চন্দ্র দাস, চুন্টা; মৎস্যজীবী), মাখন চন্দ্ৰ শুক্লাদাস (পিতা বক্স চন্দ্র শুক্লাদাস, চুন্টা; ব্যবসায়ী), দুর্যোধন নমঃশূদ্র (পিতা দুখাই নমঃশূদ্র, চুন্টা; কৃষক), প্ৰসন্ন কুমার পাল (পিতা কৃষ্ণ চন্দ্র পাল, চুন্টা; ব্যবসায়ী), গোপাল চন্দ্র পাল (পিতা বলরাম চন্দ্র পাল, চুন্টা; ব্যবসায়ী), মরণ পাল (পিতা গোপাল চন্দ্র পাল, চুন্টা; ছাত্র), পাল (পিতা গুরুচরণ পাল, চুন্টা; ব্যবসায়ী), অখিল চন্দ্ৰ পাল (পিতা কুলচন্দ্র পাল, চুন্টা; ব্যবসায়ী), প্রফুল্ল চন্দ্ৰ ভদ্ৰ (পিতা নবীন চন্দ্ৰ ভদ্ৰ, চুন্টা; কৃষক), সুধীন চন্দ্ৰ ভদ্ৰ (পিতা রমেশ চন্দ্র ভদ্র, চুন্টা; কৃষক) এবং কালাচান দেবনাথ (পিতা বলরাম দেবনাথ, চুণ্টা; কৃষক)। গণহত্যার স্থানটি চিহ্নিত করা অবস্থায় রয়েছে।
ভুক্তভোগী ও নির্যাতিতদের কয়েকজন হলেন- অঞ্জন দাস (পিতা শহীদ সুবেশ দাস, জগারপাড়, কালীকচ্ছ), গণেশ দাস (পিতা পুলক চন্দ্র দাস, ঐ; ভাইকে হত্যা ও নির্যাতন করা হয়েছে), অজিত সেন (পিতা রমেশচন্দ্র সেন, বারুইপাড়া, কালীকচ্ছ; নিজেকে নির্যাতন ও তার কাকাকে হত্যা করা হয়েছে), রাধারানী চৌধুরী (স্বামী শহীদ প্রাণকুমার চৌধুরী, ঐ), প্রদীপ সেন (ঐ; পিতাকে হত্যা করা হয়েছে), মিহির সেন (ঐ), যাদব সেন (ঐ), কল্পনা সেন (পিতাকে হত্যা করা হয়েছে) এবং আল্পনা সেন (পিতাকে হত্যা করা হয়েছে)। [মানবর্দ্ধন পাল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড