ধলঘাট রেললাইন অপারেশন (পটিয়া, চট্টগ্রাম)
ধলঘাট রেললাইন অপারেশন (পটিয়া, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় ৭ই ডিসেম্বর। কমান্ডার শাহ্ আলমের নেতৃত্বে শাহ্ আলম গ্রুপ ও সুনীল চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন কিছু মুক্তিযোদ্ধা যৌথভাবে এ অপারেশন পরিচালনা করেন। ধলঘাট স্টেশনের আশপাশের কয়েকজন সাধারণ লোকও এতে অংশ নেয় ৷
অপারেশনের দিন মুক্তিযোদ্ধারা ধলঘাট রেলস্টেশনে পৌঁছে দুদলে বিভক্ত হয়ে বেঙ্গুরা সায়রাপুলের নিকট একদল এবং কৃষ্ণাখালী রেলসেতুর দক্ষিণে অপর দল পজিশন নিয়ে কৃষ্ণাখালী রেলসেতুর দক্ষিণে রেললাইনে প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভ বসান। এরপর ধলঘাট স্টেশনের গ্যাঙম্যানদের স্টোর রুমের দরজা ভেঙ্গে রেললাইন ও খেলার সরঞ্জামাদি বের করেন। অতঃপর তাঁরা প্রায় আধা কিলোমিটার রেললাইন উপড়ে ফেলেন। একাজে স্থানীয় কয়েকজন লোক কোদাল ও টুকরি নিয়ে তাদের সহযোগিতা করে। রেললাইনের স্থানে-স্থানে মাটি কেটে জমির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়। এ কাজ যখন চলছিল, তখন বেঙ্গুরা স্টেশনে রাজাকার কমান্ডার শাহ্জাহান ও তার দল তা টের পেয়ে বেঙ্গুরা স্টেশন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে ফায়ার শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা জবাব দেন। রেললাইন উপড়ানোর কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে রেললাইনে যুক্ত করা এক্সপ্লোসিভ বিস্ফোরিত হয়। তখন রাজাকার কমান্ডার শাহ্জাহান ও তার দলের ফায়ার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারাও তাঁদের গন্তব্যে চলে যান।
এ অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- কমান্ডার শাহ্ আলম (কচুয়াই, পটিয়া), ডেপুটি কমান্ডার উদয়ন নাগ (সারোয়াতলী, বোয়ালখালী), সুনীল চক্রবর্তী, দেওয়ান মোহাম্মদ আলী (ফরিদপুর), আবুল কাসেম (মিরসরাই), সুশীল চক্রবর্তী (পশ্চিম শাকপুরা), মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (মিরসরাই), অসিত দাশ (রহমতগঞ্জ), শামসুজ্জামান হীরা (খলিসাদহ, পাবনা), প্রিয়তোষ চৌধুরী (ঠেগরপুনি, পটিয়া), পুলক কুমার দাশ (রতনপুর, পটিয়া), মোয়াজ্জম হোসেন (খুলনা), মোহাম্মদ ইউসুফ (মরিয়মনগর, রাঙ্গুনিয়া), মিয়া মোহাম্মদ জাফর (বাকলিয়া), ভূপাল দাশগুপ্ত (আনোয়ারা), সুজিত বড়ুয়া (তেকোটা), আনোয়ার হোসেন (রাঙ্গুনিয়া), শেখ মানিক (বন্দর কলোনি), ফজল আহমদ (তেকোটা, পটিয়া), শেখর দস্তিদার (ধলঘাট, পটিয়া), মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (দক্ষিণ রাউজান) এবং সুরক্ষিত চৌধুরী (কক্সবাজার)। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড