You dont have javascript enabled! Please enable it!

দৌলতপুর ক্যাম্প অপারেশন (ফেনী সদর)

দৌলতপুর ক্যাম্প অপারেশন (ফেনী সদর) পরিচালিত হয় ২৩শে অক্টোবর। এতে পাকবাহিনীর একজন মেজর ও একজন সৈন্য নিহত হয়। ৪ জন পাকসেনা ধরা পড়ে এবং তাদের মেরে ফেলা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে ফেনীর ইতিহাসে দৌলতপুর ক্যাম্প অপারেশন এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ফেনী জেলার সদর উপজেলাধীন ধলিয়া ইউনিয়নে দৌলতপুর একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম। হিন্দু অধ্যুষিত এ গ্রামে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ঘোষবাড়ি। এ বাড়িতে ছিল একটি বিখ্যাত মন্দির। মন্দিরকে কেন্দ্র করে এর আশপাশে বহু ব্যবসায়ী হিন্দু পরিবারের বসবাস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে এখানে একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। রাজাকার ও পাকসেনারা এ ক্যাম্প থেকে প্রতিনিয়ত আশপাশের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে নিরীহ লোকজনদের নির্যাতন করত, নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাত এবং বাড়িঘরে লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করত। এ খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্পে আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী কমান্ডার মাহবুব আলম তাঁর দল নিয়ে ২৩শে অক্টোবর ভোরে অতর্কিতে ক্যাম্পে আক্রমণ চালান। এর অব্যবহিত পূর্বে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ভারত থেকে ভারী অস্ত্রশস্ত্রের একটি চালান এসে পৌঁছায়। ফলে তাঁদের শক্তি ও মনোবল অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একজন মেজর ও একজন সৈন্য ঘটনাস্থলে নিহত হয়। বাকিরা পালিয়ে যাওয়ার সময় পাকবাহিনীর আরো ৪ জন সৈন্য ধরা পড়ে। তাদের নবাবপুর বাজারে নিয়ে আসা হয় এবং বাজারের পাশে নদীতে ফেলে হত্যা করা হয়। এ-যুদ্ধের সফলতায় মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি ও সাহস বহুগুণে বৃদ্ধি পায় এবং সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। [মো. ফখরুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!