You dont have javascript enabled! Please enable it!

দোহাজারী সিএন্ডবি অফিস বধ্যভূমি (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম)

দোহাজারী সিএন্ডবি অফিস বধ্যভূমি (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম) চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলায় অবস্থিত। ২২শে এপ্রিল সিএন্ডবি অফিসে পাকবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপিত হওয়ার পর এখানে বাঙালি নিধন শুরু হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামে এটাই ছিল পাকবাহিনীর প্রধান ক্যাম্প। দক্ষিণ চট্টগ্রামের নানা অঞ্চল থেকে লোকজনদের এখানে ধরে আনা হতো। তবে পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী থেকে সবচেয়ে বেশি লোককে ধরে আনা হয় ৷ এখানকার টর্চার সেলে তাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানোর পর পটিয়া থানা শান্তি কমিটির আহ্বায়ক খায়ের আহমদ চৌধুরী, কনভেনশন মুসলিম লীগ দক্ষিণ চট্টগ্রামের আহ্বায়ক এডভোকেট আহমদুর রহমান, দোহাজারী ইউনিয়ন শান্তি কমিটির আহ্বায়ক আহমদুর রহমান ও কেউচিয়া ইউনিয়ন শান্তি কমিটির আহ্বায়ক মোনাফ কোম্পানি-এর নির্দেশে তাদের হত্যা করা হতো। অধিকাংশকে সিএন্ডবি অফিসে, বাকিদের দোহাজারী ব্রিজের পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বস্থ শঙ্খ নদীর চরে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা . হতো। হত্যার পর সকলের লাশ পানিতে ফেলে দেওয়া হতো। তবে কোনো-কোনো লাশ শৃগাল-কুকুরকে খাওয়ানোর জন্য চরে রেখে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
মুক্তিযুদ্ধের নয়মাসে এ বধ্যভূমিতে তিন শতাধিক লোককে হত্যা করা হয়। তাদের অধিকাংশের লাশ শঙ্খনদীতে ফেলে দেয়া হয়। কিছুকিছু লাশ সিএন্ডবি অফিসের বাইরে মাটিচাপা দেয়া হয়। অফিসের দক্ষিণ পাশের গ্যারেজের পেছনে লোহাগাড়ার একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে গুলি করে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়া হয়। শহীদ হওয়ার আগে তিনি পাকবাহিনীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এশার নামাজ আদায় করেছিলেন বলে জানা যায়।
এ বধ্যভূমিতে হত্যার কাজটি করা হতো রাতের বেলায় অত্যন্ত গোপনে। এতে পাকবাহিনীর সঙ্গে তাদের দালাল হিসেবে যুক্ত ছিল: আবু ছৈয়দ (সাতকানিয়া), বক্কর (সাতকানিয়া), আবদুল মজিদ (কালিয়াইশ), আমিন শরীফ (পূর্ব দোহাজারী), তাজর মুলুক ওরফে মেজর তাজু (দোহাজারী), আহমদ শফি (দোহাজারী), মাহফুজুর রহমান (ফুরতলা, দোহাজারী), আইয়ুব আলী মাস্টার (জামিজুরী), এয়াকুব আলী (দোহাজারী), আবদুল হালিম খান (দোহাজারী), আবুল কাসেম (দোহাজারী), এয়াকুব মেম্বার(পূর্ব দোহাজারী), আবু যাহের (দোহাজারী) প্রমুখ। [শামসুল আরেফীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!