You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক দেলোয়ার হোসেন - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক দেলোয়ার হোসেন

দেলোয়ার হোসেন, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৬) নায়েক ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৬ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাজলাকাঠী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আমির হোসেন খন্দকার এবং মাতার নাম ছকিনা বেগম। তিনি ১৯৬৪ সালে কামারখালী কৃষ্ণসুন্দর হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্-এ যোগদান করেন। তিনি ১৯৭১ সালে ইপিআর-এ চট্টগ্রামের হালিশহরে কর্মরত ছিলেন। ২৫শে মার্চ অবাঙালি ইপিআর সেনাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে তিনি প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন। দেলোয়ার হোসেন চট্টগ্রামের হালিশহর, আগ্রাবাদ, কুমিরা বারৈয়ার হাট, করের হাট, শুভপুর প্রভৃতি যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। এরপর তিনি ১ নম্বর সেক্টরে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত হয়ে ‘জেড’ ফোর্সে যোগ দেন। তাঁর ব্যাটালিয়ান কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন আবু জাফর মো. আমিনুল হক এবং কোম্পানি কমান্ডার আমীন আহমদ চৌধুরী। দেলোয়ার হোসেন ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া, নোয়াখালীর কাইয়ারা, রেজুনিয়া, কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, রৌমারী, ভুরুঙ্গামারী, তিস্তা, সিলেটের করিমগঞ্জ, ফুলতলা, কদমতলী ও সমশেরনগরের যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় দেন। ১৪ই ডিসেম্বর মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার সমশেরনগরে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে তিনি দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তাঁর বাম পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাঁকে চিকিৎসার জন্য গৌহাটি সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে লখনৌ সেনা হাসপাতাল এবং সবশেষে মহারাষ্ট্রের পুণাতে নিয়ে গিয়ে কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নায়েক দেলোয়ার হোসেনকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তাঁর দুই স্ত্রী মোসা. হাসনে হেনা দেলোয়ার ও মাতোয়ারা হোসেন আলো। তিনি ৪ কন্যা ও ৪ পুত্র সন্তানের জনক। [শফিউদ্দিন তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড