You dont have javascript enabled! Please enable it!

দুরমুঠ হাট যুদ্ধ (মেলান্দহ, জামালপুর)

দুরমুঠ হাট যুদ্ধ (মেলান্দহ, জামালপুর) সংঘটিত হয় অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এতে একজন পাকসেনা নিহত হয়, বেশকিছু রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে এবং বাকি পাকসেনা ও রাজাকাররা পালিয়ে যায়।
দুরমুঠ মেলান্দহ থানার ১নং ইউনিয়নের অন্তর্গত একটি গ্রাম। মেলান্দহ রেলস্টেশন থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদ পর্যন্ত এটি বিস্তৃত। সপ্তাহের সোমবার দুরমুঠ হাটবারের দিন। অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের হাটের দিন বিকেল চারটার দিকে এখানে এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। ১৫ জনের মতো রাজাকার সশস্ত্র অবস্থায় হাটে প্রবেশ করে বিভিন্ন দোকান ও ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদা তোলা শুরু করে। এর আগেও তারা হাটে এসে পাকবাহিনী ও তাদের দোসর পাকিস্তানপন্থী বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দের দোহাই দিয়ে চাল, ডাল, মাছ, মাংস, টাকা- পয়সা ছিনিয়ে নিত। তাদের এই অত্যাচার বন্ধ করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধারা সেদিনের হাটবারে গোপনে সেখানে উপস্থিত হন। হাটের ব্যবসায়ীরাও সেদিন রাজাকারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শুরু হয় তুমুল মারামারি। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা সমগ্র হাট ঘিরে ফেলেন। রাজাকাররা তখন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। গোলাগুলির শব্দে হাটের লোকজন জিনিসপত্র নিয়ে বিভিন্ন দিকে ছুটতে থাকে। বহু লোক আহত ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। দুরমুঠ থেকে দক্ষিণে সাতমাইলের মতো মেলান্দহ থানার কার্যালয়। সেখান থেকে পাকবাহিনী পুরো মেলান্দহ থানা নিয়ন্ত্রণ করত। দুরমুঠ যুদ্ধের খবর পেয়ে তারা ট্রাকযোগে নিকটস্থ টনকি বাজারে (রেলস্টেশনের পূর্বে) উপস্থিত হয়। টনকি এলাকার কুদ্দুস মেম্বার পাকবাহিনী ও রাজাকারদের প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করে। উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির এক পর্যায়ে একজন পাকসেনা নিহত হয়, বেশকিছু রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে এবং বাকি পাকসেনা ও রাজাকাররা পালিয়ে যায়। [শাহ খায়রুল বাশার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!