দুর্গাপুর হাইস্কুল মুজাহিদ-রাজাকার ক্যাম্প আক্ৰমণ (মিরসরাই, চট্টগ্রাম)
দুর্গাপুর হাইস্কুল মুজাহিদ-রাজাকার ক্যাম্প আক্ৰমণ (মিরসরাই, চট্টগ্রাম) ১লা অক্টোবর পরিচালিত হয়। এতে ১৩ জন রাজাকার ও মুজাহিদ নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফরিদ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী শহীদ ও কয়েকজন আহত হন। তবে মুক্তিযোদ্ধারা ৭টি রাইফেল হস্তগত করেন।
দুর্গাপুর হাইস্কুল মুজাহিদ-রাজাকার ক্যাম্পটি ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর অন্যতম নির্যাতনকেন্দ্র। এখানে তারা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষদের নির্যাতন করত। বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন বয়সী নারীদের ধরে এনে একটি কক্ষের মধ্যে বন্দি করে তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাত। এ কেন্দ্ৰ থেকে রাজাকাররা দলবদ্ধ হয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে নির্যাতন ও লুটপাট করত। মিরসরাইয়ের মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন সময়ে এ ক্যাম্পটি আক্রমণ করে রাজাকারদের ব্যতিব্যস্ত করে রাখতেন।
১লা অক্টোবর আবুল কালাম আজাদ ও নিজাম চৌধুরীর নেতৃত্বে বিভিন্ন গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধারা দুর্গাপর হাইস্কুল মুজাহিদ-রাজাকার ক্যাম্পে সাঁড়াশি আক্রমণ করে। এতে ১৩ জন রাজাকার মুজাহিদ নিহত ও ১৪ জন আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এ-সময় রাজাকার ক্যাম্প থেকে ৭টি রাইফেল উদ্ধার করেন। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফরিদ আহমদ চৌধুরী শহীদ এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। এ ক্যাম্প আক্রমণে নূর মোহাম্মদ, মহিউদ্দিন আহমদ, রেজ্জাকুল হায়দার, মুছা মিঞা, জয়নাল, ওবায়দুল হক, কবির হোসেন, সামশুল হক, আবুল খায়ের, মো. শফিউজ্জামান, নুরুল মোস্তফা, মোছাদেক, ছাদেকুর রহমান, আলী আসগর, জামসেদ আলী, সাইফুল ইসলাম, কবির আহমদ, আবুল কালাম আজাদ, নুরুল আলম, সাহেব মিয়া, সালেহ আহমদ, মো. ইউছুফ, ফরিদ আহমদ চৌধুরী, মাহবুবুল হক, মুসা মিয়া, কামালউদ্দিন, মাঈনুদ্দিন, নুরু মোহাম্মদ সফিউল্লাহ, বদিউল আলম, আমিনুল হক, আবদুল হাই, মফিজুল ইসলাম, মহিউদ্দিন, আবুল কাসেম, রৌশন, আফসার, আবদুল হাকিম, মো. আবু তালেব প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। মিরসরাই উপজেলা হানাদারমুক্ত হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা এ ক্যাম্প থেকে বন্দি অবস্থায় ৩১ জন বিভিন্ন বয়সী নারীকে বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে তাদের কয়েকজনকে পুনর্বাসন করা হয়। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড