দাশকান্দি যুদ্ধ (শিবালয়, মানিকগঞ্জ)
দাশকান্দি যুদ্ধ (শিবালয়, মানিকগঞ্জ) সংঘটিত হয় ৮ই ডিসেম্বর। এ যুদ্ধে ১ জন পাকিস্তানি সৈন্য আহত হয়ে ধরা পড়ে। অপরদিকে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
শিবালয় থানা থেকে প্রায় ৫ কিমি দক্ষিণে পদ্মা নদীর পাড়ে দাশকান্দি গ্রামের অবস্থান। ৩রা ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় মিত্রবাহিনী মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করলে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি, সাহস ও মনোবল অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মনোবল প্রচণ্ডভাবে ভেঙ্গে পড়ে৷
এমতাবস্থায় ঢাকার বাইরের পাকিস্তানি সেনাদের একটি বড় অংশ ঢাকায় ফেরার চেষ্টা করে। তখন আরিচা ঘাট ছাড়া উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় ফেরার অন্য কোনো সহজ পথ ছিল না। কিন্তু ৩রা ডিসেম্বর থেকে মিত্রবাহিনীর বোমারু বিমানগুলো আরিচা ফেরিঘাটে ফেরিসহ সব ধরনের নৌযানের ওপর অনবরত বোমাবর্ষণ করতে থাকলে পাকিস্তানি সৈন্যরা ঢাকায় আসার বিকল্প পথ খুঁজতে থাকে। দাশকান্দি গ্রাম ছিল বিকল্প পথ। এটি আরিচা ঘাটে প্রবেশ না করে মানিকগঞ্জ হয়ে ঢাকায় আসার প্রবেশদ্বার। ফলে এ পথ ধরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকার দিকে এগুতে থাকে৷
এ সংবাদ পেয়ে মিত্রবাহিনী ৮ই ডিসেম্বর দাশকান্দি এলাকায় পদ্মা নদীতে পারাপাররত পাকিস্তানি সৈন্য বহনকারী নৌযানগুলোর ওপর বোমাবর্ষণ করে। কিন্তু ঘটনাক্রমে তা লক্ষ্যচ্যুত হয়। ফলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে বহনকারী নৌযানগুলো দ্রুত দাশকান্দি গ্রাম সংলগ্ন পদ্মা নদীর পাড়ে এলে হানাদাররা তীরে উঠে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে- করতে দাশকান্দি গ্রামে প্রবেশ করে। এ সময় দাশকান্দি গ্রামের ১ কিমি দূরে নালী বাজারে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধারা আব্দুর রউফ খানের নেতৃত্বে পলায়নরত পাকিস্তানি সৈন্যদের ওপর আক্রমণ করেন। উভয় পক্ষের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ১ জন পাকিস্তানি সৈন্য আহত হয়ে ধরা পড়ে। অন্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পিছু হটতে বাধ্য হয়। আপরপক্ষে যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা মারাত্মকভাবে আহত হন। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড