দহকুলা রেলসেতু বধ্যভূমি (উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ)
দহকুলা রেলসেতু বধ্যভূমি (উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ) সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত। পাকসেনারা এখানে বিভিন্ন সময়ে অন্তত ৭০ জন নারী- পুরুষকে হত্যা করে।
উল্লাপাড়া উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নে ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথে দহকুলা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর পাশে দহকুলা রেলসেতু বধ্যভূমি অবস্থিত। বাইরে থেকে এখানে এনে যাদের হত্যা করা হয়, তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে দহকুলার লাগোয়া গ্রামগুলো থেকে যাদের এ বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়, তাদের কয়েকজনের নাম ও পরিচয় জানা গেছে। তাদের জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে পাকসেনারা স্থানীয় মোস্তফা ও কাশেম নামে দুই দালালের সহযোগিতায় বাড়ি থেকে ধরে এনে হাত-পা বেঁধে নৌকায় করে বধ্যভূমিতে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। তাদের বাড়িঘরও হানাদাররা পুড়িয়ে দেয়। নিহতরা হলেন— লাহিড়ীপাড়ার নিতাই ঠাকুর, প্রভাত ঠাকুর, রাসবিহারী কুণ্ডু, শচিন কুণ্ডু, ন্যাপাল কুণ্ডু, বিভূতি কু-, গোলাপ শীল, হিরু শীল, মংলা শীল, গণেশ শীল, নিতাই সাহা, বিমল বাগচি ও হারান সরকার; চরমোহনপুর ঘোষপাড়ার সূর্য ঘোষ ও মনোরঞ্জন ঘোষ এবং মোহনপুর বাজারের মানিক পাল। আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জার উদ্যোগে উল্লিখিত ব্যক্তিদের স্মরণে দহকুলা নদীর পাড়ে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে।
উল্লাপাড়া পাটবন্দরের পাশে করতোয়া খাল ও বড়হর ইউনিয়নের পাটধারী আন্ধার পুকুর বধ্যভূমিতেও পাকবাহিনী বহু নারী-পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ বধ্যভূমি সংরক্ষণ না করায় পাকবাহিনীর নৃশংসতার চিহ্ন হারিয়ে যাচ্ছে। [কল্যাণ ভৌমিক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড