You dont have javascript enabled! Please enable it! দমদমা ব্রিজ বধ্যভূমি (রংপুর সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

দমদমা ব্রিজ বধ্যভূমি (রংপুর সদর)

দমদমা ব্রিজ বধ্যভূমি (রংপুর সদর) রংপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়।
রংপুর সদর উপজেলার দমদমা ব্রিজের কাছে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা বিভিন্ন সময়ে অনেক লোককে হত্যা করে। এ স্থান তখন দমদমা ব্রিজ বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিতি পায়। রংপুরের কারমাইকেল কলেজ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে জাতীয় মহাসড়কে ঘাঘট নদীর ওপর এ ব্রিজ অবস্থিত। ব্রিজ সংলগ্ন স্থানটি বধ্যভূমিতে পরিণত হয়।
৩০মে মধ্যরাতে স্থানীয় কিছু বাঙালি ও অবাঙালি স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে পাকসেনাদের একটি দল কারমাইকেল কলেজের শিক্ষক আবাসন এলাকা থেকে ৪ জন শিক্ষক ও একজন শিক্ষকের স্ত্রীকে আটক করে। আটককৃতদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এরপর তাঁদের দমদমা ব্রিজের কাছে নেয়া হয়। গাড়ি থেকে নামিয়ে ব্রিজের উত্তর দিকে ঘাঘট নদীর তীর ঘেঁষে বাঁশঝাড়ের ভেতর তাঁদের সবাইকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন- সুনীলবরণ চক্রবর্তী (প্রভাষক, দর্শন বিভাগ), রামকৃষ্ণ অধিকারী (প্রভাষক, বাংলা বিভাগ), চিত্তরঞ্জন রায় (প্রভাষক, গণিত বিভাগ), কালাচাঁদ রায় (প্রভাষক, রসায়ন) ও মঞ্জুশ্রী রায় (প্রভাষক কালাচাঁদ রায়ের স্ত্রী)। হানাদাররা মৃতদের অর্ধেক শরীর মাটিতে পুঁতে রাখে। সেদিন কালাচাঁদ রায়ের দুই শিশু সন্তানকে ধরে নিয়ে ভীতি প্রদর্শন করা হয়।
৭ই জুন দমদমা ব্রিজের দক্ষিণপাড়ে হানাদার বাহিনী তিনটি ট্রাকে করে আনা অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। রংপুরের বাইরে থেকে ধরে আনা এসব মানুষের পরিচয় পাওয়া যায়নি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ দমদমা ব্রিজ বধ্যভূমিতে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা প্রায়ই নিরীহ মানুষদের হত্যা করত। ‘৭১-এর বধ্যভূমি” নামে এখানে একটি স্মৃতিফলক স্থাপিত হয়েছে। [গীতিময় রায়]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড