মুক্তিযুদ্ধে থানচি উপজেলা (বান্দরবান)
থানচি উপজেলা (বান্দরবান) পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী গভীর অরণ্য, পর্বতশৃঙ্গ আর সাঙ্গু-মাতামুহুরী নদী বেষ্টিত উপজেলা থানচি। এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গার মতো থানচির মুক্তিকামী জনগণও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা আর দিক-নির্দেশনায় থানচির মানুষ প্রেরণা, সাহস ও শক্তি পায়। তারা বীরত্বের সঙ্গে হানাদার বাহিনীর মোকাবেলা করে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ-এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানা শুরু করে। এ অবস্থায় বাংলার মানুষের সামনে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙ্গার জন্য সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে দেখা দেয়। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ-এ থানচি ও সমগ্র বান্দরবানের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের দিক-নির্দেশনা পায় এবং সর্বাত্মকভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ।
থানচি উপজেলায় অবস্থানরত সমতল অঞ্চল থেকে আসা বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করলেও বান্দরবান জেলা বোমাং সার্কেলের অধীনে হওয়ায় বোমাং রাজার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তাদের অনেকে প্রকাশ্যে ও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করার সাহস পায়নি। তবুও দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থানচির মুক্তিযোদ্ধারা গোপনে অসীম সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে সংগঠিত হয়ে শত্রুর মোকাবেলায় বিভিন্ন আক্রমণ ও অপারেশনে অংশ নেন। সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে এসে দাঁড়ায়।
এ অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর বাঙালি সদস্য, , ইপিআর জওয়ান ও অফিসার, পুলিশ বাহিনীর বাঙালি সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁদের পরামর্শ, নির্দেশনা ও কৌশল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখে। তাঁদের দ্বারা স্থানীয় জনগণ এবং মুক্তিযোদ্ধারা উজ্জীবিত হন। থানচিতে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের মধ্যে ছিলেন মো. আক্কেল আলী (পিতা কালু মিয়া, হেয়াইক্ষ্যং, থানচি বাজার), মো. আবুল কাশেম, মো. আবু তাহের, শামসুল ইসলাম, সুকুমার বড়ুয়া, মোখলেছুর রহমান, সুবাদার আমির হোসেন, সুকুমার দাশ প্রমুখ।
থানচিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া হয় অত্যন্ত গোপনে। নেতারা স্থানীয় জনগণের মধ্য থেকে মুক্তিযোদ্ধা বাছাই করে তাদেরকে সংগঠিত করেন। তাদের ইপিআর ক্যাম্পে নিয়ে যান। এ ক্ষেত্রে মোহাম্মদ জাকারিয়া, হুমায়ুন কবির, আবু তাহের (দোহাজারী), হোসেন আলী (থানচির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান), মো. আক্কেল আলী, উলাচিং মারমা, মিলন কান্তি দাস, শফিকুর রহমান (থানচি শহর)-সহ অন্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তবে এঁদের এ কাজ বাধাহীন ছিল না।
এপ্রিলের শেষ ও মে মাসের প্রথমদিকে থানচির ৬০-৭০ জন বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ গোপনে ভারতের মিজোরামের দেমাগ্রী ক্যাম্পে যান। তাঁদের অনেকে সেখানে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা মো. আক্কেল আলী দেমাগ্রী গেলে সেখানে ডা. ফয়েজ, আবু সালেহ এমএনএ (চট্টগ্রাম ৮ আসন), নুরুল ইসলাম, কিবরিয়া এবং আরো অনেকের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা সেখানে ১৮-২০ দিন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কমান্ডার ছিলেন দোহাজারীর জলিল বক্স। সেখানে অন্যদের সঙ্গে কমান্ডার এম এম শর্মাও তাঁদের প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযোদ্ধারা হরিনা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ দল কাপ্তাইয়ে সাত-আট দিন অবস্থান করে। এরপর চট্টগ্রাম কালুরঘাট ক্যাম্পে আসে। এখানে সপ্তাহকাল অবস্থান করার পর মুক্তিযোদ্ধাদের এ দলটি বান্দরবনে আসে। সেখান থেকে এম এম শর্মার নেতৃত্বে রোয়াংছড়ি হয়ে রুমায় এবং পরে থানচির বিভিন্ন এলাকায় যায়।
থানচিতে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক কোনো প্রতিরোধযুদ্ধ হয়নি। তবে রাজাকার ও শান্তি কমিটি গঠিত হওয়ার পর এদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ হয়।
১৫ই এপ্রিল পাকবাহিনী বান্দরবান সদরে অনুপ্রবেশ করে। তারা চট্টগ্রামের সাতকানিয়া দোহাজারী হয়ে বান্দরবান শহরে আসে। পাকবাহিনী থানচি উপজেলায় যায়নি। এখানে তারা কোনো ক্যাম্পও স্থাপন করেনি।
থানচিতে যে-সকল মুক্তিযোদ্ধা সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন- বান্দরবান সদরের ইউ কে চিং, বীর বিক্রম-, মো. সফিকুর রহমান, কবির আহম্মদ, মনির আহম্মদ মনি, সত্যেন্দ্র মজুমদার, সুবল মোহুরী, সাধন দাশ, মোখলেছুর রহমান, সুবাদার আমির হোসেন, আব্দুল ওহাব, সুকুমার দাশ, সত্য রঞ্জন মল্লিক, চিত্ত রঞ্জন মল্লিক, আলী আহামদ, মো. আবুল কাশেম, মাহবুবুর রহমান, লিয়ন পুন বম, বটতলীর লক্ষণ তনচংগ্যা, গিরিচান তনচংগ্যা, বান্দরবান মধ্যমপাড়ার সত্যেন্দ্র মজুমদার, ডা. সন্তোষ রঞ্জন দাশ, উজানীপাড়ার সুবেদার মেজর (অব.) মং সি নু, বান্দরবান থানচির মো. আক্কেল আলী, উলাচিং মারমা, হোসেন আSaved হ্লা, মিলন কান্তি দাস, সুধাংশু বিমল দাশ, রোয়াংছড়ির শামসুল ইসলাম, সুভাষ দাশ, সুয়ালকের উদয়সেন তনচংগ্যা, কুহালং-এর মনোরঞ্জন বড়ুয়া, সুকুমার বড়ুয়া প্রমুখ।
থানচি উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ছিলেন এম এম শর্মা তিনি পাকবাহিনী ও রাজাকাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। থানচির আর এক কমান্ডার ছিলেন টি এম আলী (সাবেক সেনাসদস্য, শুরমান ঘাঁটি, যশোর; অবাঙালি, তবে তাঁর স্ত্রী ছিলেন বাঙালি)। তিনি ডিসেম্বরের শেষদিকে শহীদ হন। এছাড়া ধোপাছড়ি ক্যাম্পের যুদ্ধকালীন কমান্ডার ছিলেন সুবাদার আমির হোসেন। ক্যাজরপাড়া ক্যাম্প কমান্ডার ছিলেন মো. ইদ্রিছ মোল্লা।
থানচি থানায় পাকবাহিনীর সহযোগী হিসেবে রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর অনেক সদস্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। বান্দরবানের এমপিএ ও বোমাং রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরী ছিল থানচি তথা বান্দরবনে পাকবাহিনীর প্রধান সহযোগী। তার নেতৃত্বে এ এলাকায় রাজাকার, আলবদর ও শান্তি কমিটির কার্যক্রম পরিচালিত হতো। সে গভর্নর ডা. মালেকের মন্ত্রিসভায় যোগদান করে। তাকে প্রধান করে বান্দরবানে ২৫-সদস্য বিশিষ্ট শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। বান্দরবানে ২০শে জুন মহকুমা শান্তি কমিটি গঠিত হয়। মহকুমা শান্তি কমিটি দ্বারা বান্দরবান সদর, রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি থানা নিয়ন্ত্রিত হতো। শান্তি কমিটির লোকজনের ভয়ে মুক্তিযোদ্ধারা প্রকাশ্যে কাজ করতে পারেননি। তাঁরা গোপনে ও রাতে তাঁদের কার্যক্রম চালাতেন।
থানচি উপজেলায় শান্তি কমিটির প্রধান ছিল সু ক্য উ মারমা (হেডম্যান)। অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিল— এম. রহমান চৌধুরী, এ আর মাস্টার, টুং নুই প্রু, আ. হোসাইন সওদাগর, কবির আহম্মদ সওদাগর, সাই থোয়াই প্রু, আব্দুস সালাম সওদাগর, এস এস প্রু, শো হ্লা প্রু ওরফে চাইলো প্রু, বজলুর রশীদ, সা চিং প্রু, হারুনুর রশীদ, মো. আয়ুব চৌধুরী, খ্যউ চৌ প্রু, থোয়াই সা জাই, মং চাই প্রু, সা শিউ প্রু (পিতা এম আর প্রু, চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ), উ সা মং, ক্য চিং প্রু, ম্রা সা থোয়াই, চন্দন কুমার সোরকী, থেইন নিই মং, হাফিজুর রহমান চৌধুরী, জামালউদ্দীন প্রমুখ।
অং শং প্রু চৌধুরীর প্রত্যক্ষ নির্দেশ ছিল থানচি উপজেলার মানুষ যাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে। তার নির্দেশে রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের ধরার জন্য তৎপরতা চালাত। তাদের অন্যতম কাজ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের গতিবিধি লক্ষ করা, মুক্তিবাহিনীর খবরাখবর পাকবাহিনীকে জানানো, পাকহানাদারদের ক্যাম্পে রসদ যোগান দেয়া ইত্যাদি। তার কারণে রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা হত্যা, নারীনির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে। তারা অনেককে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন শেষে হত্যা করে।
জুন মাসে রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধা মো. আক্কেল আলী ও মো. আবু তাহেরকে ধরে থানচির রেইছা পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। আগস্ট মাসে রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা থানচির একটি ম্রো পাড়ার কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, নারীদের নির্যাতন এবং অনেকের অর্থ-সম্পদ ও খাদ্য সামগ্রী লুণ্ঠন করে।
থানচি বান্দরবান সদর থেকে দূরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় পাকবাহিনীর সৈন্যরা থানচিতে কোনো নির্যাতনকেন্দ্ৰ বা বন্দিশিবির স্থাপন করেনি। থানচির মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মুক্তিকামী মানুষকে ধরে বান্দরবান জেলা পরিষদের রেস্ট হাউজে স্থাপিত পাকবাহিনীর ক্যাম্প এবং কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের নির্যাতনকেন্দ্র ও বন্দিশিবিরে নিয়ে নির্যাতন করা হতো। এসব নির্যাতনকেন্দ্র আর বন্দিশিবিরে থানচির অনেক নিরীহ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যাও করা হয়।
থানচি থানায় কোনো বধ্যভূমি ও গণকবর নেই। থানচির বিভিন্ন পাড়া ও বাজার থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ লোকজনকে ধরে নিয়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এনে নির্যাতন ও হত্যা করা হত। তবে এখন পর্যন্ত সেসব বধ্যভূমি বা গণকবর চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।
এম এন শর্মার নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা মে মাসে রোয়াংছড়ি হয়ে রুমায় যায়। মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার, আলবদর বাহিনী ও শান্তি কমিটির সদস্যদের একটি সভা চলার খবর পেয়ে সেখানে আক্রমণ করলে অস্ত্র ফেলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় রাজাকারদের ২টি এসএলআর, ২টি স্টেনগান ও ৮টি থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল তাঁদের হস্তগত হয়। এসব অস্ত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা থানচি উপজেলায় বিভিন্ন অপারেশন পরিচালনা করেন।
জুন মাসে রাজাকাররা থানচির একটি ম্রো পাড়ায় সাধারণ মানুষদের ওপর নির্যাতন করছে শুনে ১০-১২ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল সেখানে গেলে রাজাকাররা পালিয়ে যায়। এ অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন কমান্ডার এম এম শর্মা, মো. আক্কেল আলী, উলাচিং মারমা, মিলন কান্তি দাস, মং শৈ হ্লা, সুকুমার বড়ুয়া (পিতা উপেন্দ্র লাল বড়ুয়া, বটতলী, ইউনিয়ন কুহালং, বান্দরবান), সুধাংশু বিমল, শফিকুর রহমান প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা।
অক্টোবর মাসে রুমা ও থানচি এলাকার মধ্যবর্তী মুরংপাড়ায় রাজাকার ও শান্তি কমিটির কিছু লোকের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েক ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে কয়েকজন রাজাকার আহত হয়। এ সময় রাজাকাররা কয়েকটি মারমা ও ম্রো বাড়িতে হামলা করে।
নভেম্বরে ২০-২৫ জনের একটি মুক্তিযোদ্ধা দল বান্দরবানের রোয়াংছড়ির ধোপাছড়ি ও থানচি এলাকায় আসে। একই মাসে মুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমান ও কমান্ডার সুবাদার আমির হোসেন ধোয়াছড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করেন। রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সময় সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এসব যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর পক্ষে নেতৃত্ব দেন কমান্ডার টি এম আলী, এম এম শর্মা, আমির হোসেন ও মোখলেছুর রহমান।
মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে থানচির বিভিন্ন পাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রাজাকারদের সংঘর্ষ হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন পাড়ায় ও নদী দিয়ে ব্যবসায়ীরা নৌকায় মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় রাজাকার ও শান্তি কমিটির লোকেরা লুটপাট ও চাঁদা আদায় এবং লোকজনকে নির্যাতন করত। এসব খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করলে প্রায়ই তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হতো। ১৩ই ডিসেম্বর থানচি উপজেলা সম্পূর্ণভাবে হানাদারমুক্ত হয়। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড