স্থানীয় মুক্তিবাহিনী তৈয়ব বাহিনী (হরিণাকুণ্ডু, ঝিনাইদহ)
তৈয়ব বাহিনী (হরিণাকুণ্ডু, ঝিনাইদহ) হরিণাকুণ্ডু উপজেলার একটি স্থানীয় মুক্তিবাহিনী। ৫ নং কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের হিজলী গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলী (পিতা আকেজ আলী বিশ্বাস)-র নেতৃত্বে এটি গঠিত হয়। তৈয়ব আলী ১৯৫২ সালে এসএসসি পাশ করার পর আনসার বাহিনীতে যোগ দেন এবং কমান্ডার পদে উন্নীত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি তাতে অংশগ্রহণ করেন। ৩১শে মার্চ হরিণাকুণ্ডু প্রতিরোধযুদ্ধ-এ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং বাকিরা মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের পশ্চিম পাশে চরখাজুরার মাঠে (গজারিয়া বিলের পশ্চিম পাশে) গেলে সেখানে তাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনগণের পুনরায় যুদ্ধ হয়। তৈয়ব আলীও এ-যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধে পাঁচ টিকিয়া গ্রামের একজন আদিবাসী শহীদ হন। এ-যুদ্ধের পর তৈয়ব আলী ভারতে যান। সেখানে আরো ভারী অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে তিনি নিজস্ব একটি বাহিনী গঠন করেন, যা পরবর্তীকালে তৈয়ব বাহিনী নামে পরিচিতি পায়। এ বাহিনীর যোদ্ধারা ছিলেন মো. মোশারফ হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস, আফসার উদ্দীন, আব্দুর রহিম, আনারুদ্দিন, মতিয়ার মুনশী প্রমুখ। এ বাহিনী গঠনের পর পাকসেনা ও রাজাকাররা তাঁর বাড়িটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তৈয়ব বাহিনী মিয়ালমারী যুদ্ধ, তিতুদোহ হুলেমারি যুদ্ধসহ সমগ্র ঝিনাইদহ জেলায় বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেয়। তৈয়ব আলী ও তাঁর বাহিনী বৈডাঙ্গা ব্রিজ থেকে তিনজন পাকসেনাকে ধরে এনে হত্যা করে। [জামাল উদ্দিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড