You dont have javascript enabled! Please enable it!

তেরাইল গণহত্যা (গাংনী, মেহেরপুর)

তেরাইল গণহত্যা (গাংনী, মেহেরপুর) সংঘটিত হয় ১৮ ও ১৯শে জুলাই। প্রথম দিন ৪ জন এবং পরের দিন ৫ জন মোট ৯ জন সাধারণ গ্রামবাসী এই নারকীয় গণহত্যার শিকার হন। তারা সবাই তেরাইল গ্রামের অধিবাসী তেরাইল প্রাইমারি স্কুলের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে দুজন পাকিস্তানি সৈন্য ১৮ই জুলাই সন্ধ্যার পর গ্রামের এক সাধারণ কৃষকের স্ত্রী সখিনাকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তার জীর্ণ কুটিরে প্রবেশ করে। সঙ্গে-সঙ্গে তার স্বামী ধারালো হেঁসো দিয়ে কুপিয়ে দুই সৈনিককে হত্যা করে এবং নিজে আহত অবস্থায় তাদের রাইফেল দুটি নিয়ে সস্ত্রীক গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পরপরই গ্রামবাসীর ওপর শুরু হয় হানাদার বাহিনীর বেপরোয়া নির্যাতন। তারা গ্রামের নারী-পুরুষ অনেককেই স্কুলের সামনে ধরে এনে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। কেউ খালের পানিতে ডুব দিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। রাতেই হানাদাররা আরো দুজন নারী- পুরুষকে ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে। পরদিন ১৯শে জুলাই পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে যুক্ত হয় স্থানীয় রাজাকার এবং শান্তি কমিটির সদস্যরা। তারা ঘরে- ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট শুরু করে। গণহত্যার পর নিরীহ গ্রামবাসীদের মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে এবং দাফন না করায় সেগুলো শেয়াল-কুকুরের খাদ্যে পরিণত হয়। তেরাইল গণহত্যার শিকার ৯ জন নারী-পুরুষ হলেন- কিয়ামত শাহ্ (পিতা আব্দুল গনি শাহ্), ফতেজান (স্বামী আব্দুল গনি শাহ্), বজলু মীর, নাঈমা খাতুন (বজলু মীরের শাশুড়ি), নস্কর শাহ্ (পিতা পানু শাহ্), সৈয়দ মণ্ডল (পিতা ইবাদত মণ্ডল), রইছ বাগ (পিতা বিশু বাগ), হোসেন মালিথা (পিতা কলিম উদ্দীন মালিথা) ও আহাদ আলী জটি (পিতা আইনদ্দীন)। [রফিকুর রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!