তেলিয়াপাড়া এম্বুশ (মাধবপুর, হবিগঞ্জ)
তেলিয়াপাড়া এম্বুশ (মাধবপুর, হবিগঞ্জ) রচিত হয় দুদিন — ১৬ই মে ও ১৯শে মে। এতে প্রায় ১শ’র কাছাকাছি পাকসেনা নিহত হয়। অপরদিকে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ২ জন ধরা পড়েন।
নলুয়া বাগানে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে প্রচণ্ড মার খেয়ে পাকিস্তানি সেনাদের শক্তি-সামর্থ্য কমে আসে। তাই তারা চুনারুঘাট থেকে অতিরিক্ত সৈন্য সংগ্রহ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখে রওনা হয় এবং ১৬ই মে তেলিয়াপাড়া অতিক্রম করার সময় মুক্তিযোদ্ধাদের এম্বুশে পড়ে। ক্যাপ্টেন মতিন এম্বুশ পরিচালনা করেন। পাকিস্তানি বাহিনী ক্যাপ্টেন মতিনের এম্বুশে ঢুকে পড়ে। নিজেদের আক্রমণ বৃত্তের মধ্যে পেয়ে ক্যাপ্টেন মতিন ও তাঁর দল একযোগে তাদের আক্রমণ করে। এতে ৪০ জন পাকিস্তানি সেনার একটি সামরিক কনভয় ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক শহীদ হন ও দুজন মুক্তিযোদ্ধা ধরা পড়েন। পরবর্তীতে তাঁদের একজন পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও অপর জন শহীদ হন। আব্দুল খালেককে নলুয়া চা বাগানে সমাহিত করা হয়।
তেলিয়াপাড়ায় দ্বিতীয় এম্বুশ রচিত হয় লে. হেলাল মোরশেদের নেতৃত্বে। তিনি ক্যাপ্টেন নাসিমের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মনতলা থেকে তেলিয়াপাড়ায় চলে আসেন। তেলিয়াপাড়ায় যে কোম্পানিটি ডিফেন্সে ছিল, এর দায়িত্ব তাঁকে দেয়া হয়। তিনি উক্ত কোম্পানির কমান্ডার নিযুক্ত হন। ১৯শে মে তেলিয়াপাড়া রাস্তার ৮১ নং মাইলপোস্টের নিকট তিনি একটি এম্বুশ রচনা করেন। এতে তিনি দুটি পাকিস্তানি ট্রাক ধ্বংস করতে সক্ষম হন। এর ফলে প্রায় অর্ধশত পাকিস্তানি সৈন্য হতাহত হয়। ২০শে মে চূড়ান্ত যুদ্ধে পাকহানাদের কাছে তেলিয়াপাড়ার পতন হয়। এ যুদ্ধে পাকসেনা ও মুক্তিযোদ্ধা উভয়পক্ষের অনেকে হতাহত হয়। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড