তেলিয়াপাড়া-চুনারুঘাট রাস্তায় এম্বুশ (মাধবপুর, হবিগঞ্জ)
তেলিয়াপাড়া-চুনারুঘাট রাস্তায় এম্বুশ (মাধবপুর, হবিগঞ্জ) রচিত হয় ১১ই মে। এতে পাকবাহিনীর প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়।
লালচান্দ চা বাগান অপারেশন থেকে ফিরে ক্যাপ্টেন মতিন তেলিয়াপাড়া প্রতিরক্ষার দায়িত্ব নেন। এ-সময় পাকবাহিনী জগদীশপুরে ফিল্ডগানের একটি গোলন্দাজ ইউনিট নিয়ে ১০ই মে থেকে তেলিয়াপাড়ায় লক্ষ্যবিহীন গোলাবর্ষণ করতে থাকে। তাতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো ক্ষতি সাধিত হয়নি। শত্রুরা এক কোম্পানি সৈন্য নিয়ে আক্রমণ রচনা করে। এ- সময় তেলিয়াপাড়া-চুনারুঘাট সড়কে তারা যাতায়াত অব্যাহত রাখে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের এ যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করার তাগিদ অনুভব করেন। তাই লেফটেন্যান্ট হেলাল মোরশেদ উক্ত রাস্তা বিধ্বস্ত করার পরিকল্পনা করেন। সে পরিকল্পনা মোতাবেক তিনি ১১ই মে একটি সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান গ্রহণ করেন। রাস্তার যে মোড়ে মাইন স্থাপন করা হয়, সেখানে আলকাতরা বিছিয়ে তার ওপর গাড়ির টায়ারের দাগ বসিয়ে মাইনের চিহ্ন আড়াল করে পাকিস্তানি কনভয়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।
গোলন্দাজ ছত্রছায়ায় চুনারুঘাটের দিকে কয়েকটি সামরিক কনভয় এগিয়ে যায়। প্রথম জিপটি পাশ কেটে চলে যায়। এরপর একটি ট্রাকও অক্ষত অবস্থায় চলে যায়। তৃতীয়টি একটি মাল বোঝাই ৭ টনি ট্রাক। এর চাপে মাইনটির বিস্ফোরণ ঘটে। পারস্পরিক প্রতিক্রিয়ায় অন্যান্য মাইনও বিস্ফোরিত হয়। লে. মোরশেদের সৈন্যরা শত্রুর উদ্দেশে গোলাগুলি শুরু করেন। প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্দেশ্যে পাকসেনারাও তাদের প্রতি ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে। কিন্তু সে আক্রমণ বীর মুক্তিযোদ্ধারা সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করে তাদের হটিয়ে দিতে সক্ষম হন। এখানে শত্রুপক্ষের ভীষণ ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রচুর অস্ত্রসহ মুক্তিযোদ্ধারা এখানে একটি বাস অক্ষত অবস্থায় দখল করেন। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড