You dont have javascript enabled! Please enable it!

তালাপ্রাসাদ গণহত্যা (বানারীপাড়া, বরিশাল)

তালাপ্রাসাদ গণহত্যা (বানারীপাড়া, বরিশাল) সংঘটিত হয় ১০ই নভেম্বর। বানারীপাড়া উপজেলার নদীবেষ্টিত ইউনিয়ন সৈয়দকাঠীর একটি প্রত্যন্ত গ্রাম তালাপ্রাসাদ। পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দোসর রাজাকারদের সহায়তায় এ গ্রামে এক নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত করে। এতে ১৪ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
তালাপ্রাসাদ গ্রামের পার্শ্ববর্তী সন্ধ্যা নদী দিয়ে প্রায়ই পাকিস্তানি সেনারা গানবোটে টহল দিত এবং বিভিন্ন এলাকা আক্রমণ করে লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যা চালাত। মাঝে-মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা গ্রাম থেকে পাকিস্তানিদের গানবোট লক্ষ করে গুলি ছুড়তেন। ঘটনার দিন পাকিস্তানি সেনারা তালাপ্রাসাদ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা থাকতে পারে রাজাকারদের দেয়া এ তথ্যের ভিত্তিতে নলশ্রী নামক স্থানে গানবোট থামিয়ে তালাপ্রাসাদ গ্রাম আক্রমণ করে। গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলিল জানান, ‘গ্রামের সাধারণ মানুষ যখন ক্ষেত-খামারে দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত, তখন হঠাৎ পাকিস্তানিদের আক্রমণে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। পাকিস্তানিরা সাধারণ মানুষ যাকে যে অবস্থায় পেয়েছে সেখানেই গুলি করে হত্যা করেছে।’ তালাপ্রাসাদ গ্রামের এ গণহত্যায় দুই পরিবারের বাবা ও ছেলেসহ ১৪ জন মানুষ শহীদ হন। পরে তাদের লাশগুলো কবর দেয়া হয়। পিতা-পুত্রকে যে-দুটি কবরে সমাহিত করা হয়, সে-দুটি জোড়া করব হিসেবে পরিচিত।
তালাপ্রাসাদ গণহত্যায় শহীদ ১০ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- মো. মোশারেফ হাওলাদার (পিতা গগন আলী হাওলাদার), মো. আবদুস সাত্তার (পিতা জবেদ আলী বেপারী), বাবরজান হালদার (পিতা সোনামউদ্দিন হালদার), কদম আলী বেপারী (পিতা ফরমান আলী বেপারী), আবদুল গনি খন্দকার (পিতা মো. কুব্বাত আলী খন্দকার), মো. দেলোয়ার খন্দকার (পিতা আবদুল গনি খন্দকার), মো. জোনাব আলী (পিতা মো. রহিমউদ্দিন), মো. কালু (পিতা মো. জোনাব আলী), মো. তুজম্বর আলী (পিতা ছবেরউদ্দিন হাওলাদার) ও মো. আবদুর রহমান (পিতা মো. রাজে আলী)। [মনিরুজ্জামান শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!