তারাটিয়া গণহত্যা (আত্রাই, নওগাঁ)
তারাটিয়া গণহত্যা (আত্রাই, নওগাঁ) সংঘটিত হয় ১১ই জুলাই। এতে ৯ জন সাধারণ যুবক শহীদ হন।
নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তারাটিয়া গ্রামটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম ঘাঁটি প্রশিক্ষক মগরেব এখানে গোপনে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতেন। রাজাকারদের মাধ্যমে এ খবর আত্রাইঘাট রেলস্টেশনে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে পৌঁছলে ১১ই জুলাই ভোররাতে পাকবাহিনী তারাটিয়া গ্রাম আক্রমণের জন্য ৩টি কোশা নৌকাযোগে পার্শ্ববর্তী শ্রীরামপুর গ্রামের অদূরে বিলের মধ্যে এসে অপেক্ষা করে। শ্রীরামপুর গ্রামের যুবক ছহির উদ্দীন খাঁ ওরফে গোবরা বিলের মধ্যে পাকসেনাদের দেখতে পায় এবং সঙ্গে-সঙ্গে ফিরে এসে শ্রীরামপুর গ্রামের সবাইকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলে। এরপর গোবরা সাঁতরিয়ে পাশের তারাটিয়া গ্রামে এসে চিৎকার করে পাকবাহিনীর আগমনের খবর সবাইকে জানিয়ে দেয়। গোবরার কথা শুনে অধিকাংশ মানুষ নৌকাযোগে নিরাপদ আশ্রয়ে অন্যত্র চলে যায়। নিজ গ্রামে ফিরে আসার সময় গোবরাসহ ১০ জন যুবককে আটক করে পাকবাহিনী। তারা নাজমুল হক জরিপ নামে একজন বাদে ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করে। শহীদরা হলেন- ছহির উদ্দীন খাঁ ওরফে গোবরা, আশরাফুল ইসলাম মণ্ডল, ফাজেল প্রামাণিক, শকিমুদ্দীন সরদার ওরফে সকা, জসিমউদ্দিন মোল্লা ওরফে চেরু, পতো প্রামাণিক, সমশের আলী, আয়ুব আলী ও আমিন প্রামাণিক। পুরাতন শাড়ি ও লুঙ্গি দিয়ে গ্রামবাসী লাশগুলো কবর দেয়। তারাটিয়া হত্যাকান্ডে শহীদদের স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। [ফরিদুল আলম পিন্টু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড