You dont have javascript enabled! Please enable it! তামাবিল শুল্ক স্টেশন গণকবর (গোয়াইনঘাট, সিলেট) - সংগ্রামের নোটবুক

তামাবিল শুল্ক স্টেশন গণকবর (গোয়াইনঘাট, সিলেট)

তামাবিল শুল্ক স্টেশন গণকবর (গোয়াইনঘাট, সিলেট) সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে ১৩ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে কবর দেয়া হয়।
ভারতের শিলংয়ের পথে সিলেট থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরের সীমান্ত জাফলংয়ের তামাবিল। তামাবিল পেরিয়ে ভারতে ঢুকলেই ডাউকি। সীমান্ত পার হয়ে উত্তরে এগিয়ে বড় দুটি পাহাড় পেরোলেই ডাউকি সাব- সেক্টর কমান্ডের কার্যালয়। ১৯৭১ সালে গোয়াইনঘাট ছিল ৫নং সেক্টরের ডাউকি সাব-সেক্টরের অধীন। তামাবিলে পাকিস্তানি সেনাদের একটি শক্ত ঘাঁটি ছিল। মে মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এখানে অবস্থান করে। তারা সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এখানে বেশি গণহত্যা চালায়। যুদ্ধের শেষের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদারদের ঘাঁটিগুলো দখল করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হলেও সম্মুখ যুদ্ধে অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
ডাউকি ছিল ৫ নম্বর সেক্টরের সবচেয়ে বড় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। মে মাসের শেষদিক থেকে এ ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। অন্যান্য ক্যাম্প থেকেও প্রশিক্ষণ শেষে এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধারা যোগ দিতেন। এরপর এখান থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালিত হয়।
রাধানাগর ও কাফাউরা এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাঁদের মধ্যে ৯ জনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন- মজিবুর রহমান পাটোয়ারী, আবুল হোসেন, ইব্রাহিম মিয়া, আব্দুর রহমান, আসমান মিয়া, ফজলুল হক, ফরমান আলী, আব্দুল আজিজ ওরফে আজিম মিয়া ও দুলাল মিয়া ওরফে তুলা মিয়া। শহীদ ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধাকে তামাবিল শুল্ক স্টেশনের পাশের গণকবরে সমাহিত করা হয়। যুদ্ধের পর দেয়াল নির্মাণ করে গণকবরটি চিহ্নিত করা হলেও বর্তমানে এটি অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। [তপন পালিত]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড