You dont have javascript enabled! Please enable it!

তজুমদ্দিন থানা অপারেশন (তজুমদ্দিন, ভোলা)

তজুমদ্দিন থানা অপারেশন (তজুমদ্দিন, ভোলা) পরিচালিত হয় ২৮শে অক্টোবর। এর ফলে থানার পুলিশ ও রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করে এবং থানা হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভোলা জেলার অন্যান্য থানার মতো তজুমদ্দিন থানাও পাকবাহিনীর দখলে ছিল। সে-সময় তজুমদ্দিন থানার সঙ্গে সড়ক পথে সরাসরি যোগাযোগ ছিল না বললেই চলে। ফলে এ থানায় পাকসেনাদের চলাচলের সুযোগ ছিল কম। এ থানা ছিল মূলত রাজাকারদের দখলে।
লালমোহন থানা দখলের পর অক্টোবর মাসের শেষদিকে মুক্তিযোদ্ধারা তজুমদ্দিন থানা দখলের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের নীতি ছিল যত কম ক্ষয়ক্ষতি ও রক্তপাত করে যুদ্ধ জয় করা যায়। এ লক্ষ্যে তাঁরা তজুমদ্দিন থানার দালালদের অবস্থান ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে থাকেন। ২৮শে অক্টোবর প্রায় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার একটি দল শশীগঞ্জ বাজারে উপস্থিত হয়ে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। এর একটির নেতৃত্বে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কায়কাউছ মিয়া, সুবেদার এম এ রশীদ এবং অপর অংশের নেতৃত্ব দেন এন্তাজ মিয়া।
তজুমদ্দিন থানা দখল পরিকল্পনায় মুক্তিযোদ্ধারা দুই ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হন। এক, দখলদারদের আত্মসমর্পণে রাজি করানো, দুই, সরাসরি যুদ্ধ পরিচালনা করা। তবে সরাসরি যুদ্ধে যাওয়ার আগে তাঁরা স্থানীয় শান্তি কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক মিয়া ও অন্যদের মাধ্যমে থানায় অবস্থানকারী পুলিশ ও রাজাকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপের পর তারা আত্মসমর্পণে রাজি হয়। মুক্তিযোদ্ধারা দুদিক থেকে থানায় প্রবেশ করেন। তাঁরা থানা তল্লাশি করে ৬৩টি রাইফেল এবং ২ লক্ষ ৬ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করেন। মুক্তিযোদ্ধারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে ‘জয় বাংলা” স্লোগান দিতে থাকেন। আশপাশের লোকজনও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে-দিতে থানার দিকে এগিয়ে আসে। মুক্তিযোদ্ধারা থানা থেকে প্রাপ্ত নগদ অর্থ সার্কেল অফিসার নীহার রঞ্জন রায়ের নিকট জমা দেন। এভাবে তজুমদ্দিন থানা হানাদারমুক্ত হয়। [রেহানা পারভীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!