ডোমার বনবিভাগ বধ্যভূমি (নীলফামারী)
ডোমার বনবিভাগ বধ্যভূমি (নীলফামারী) নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলা পরিষদ কোয়ার্টার্সের উত্তর পাশে বনবিভাগের অফিসের অভ্যন্তরে অবস্থিত। এপ্রিল মাসের প্রথমদিকে পাকসেনাদের একটি দল সৈয়দপুর থেকে বিশেষ ট্রেনে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ডোমারে পৌঁছে সিও অফিস ও বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসে ক্যাম্প স্থাপন করে। ৭ই এপ্রিল থেকে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা এ বধ্যভূমিতে শতাধিক নারী-পুরুষকে হত্যা করে।
উপর্যুক্ত ক্যাম্পে বিভিন্ন জায়গা থেকে মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ মানুষ ও নারীদের ধরে এনে নির্মম নির্যাতন ও অত্যাচার করে হত্যা করা হতো। শালকি নদীর তীরবর্তী এ বধ্যভূমিতে হত্যার পর লাশগুলো পুঁতে রাখা হতো, কখনো নদীর পাড়ে ফেলে রাখা হতো এবং কখনোা পানিতে ভসিয়ে দেয়া হতো। অধিকাংশ লাশই শেয়াল-কুকুর ও শকুনে খেয়ে ফেলেছে। এ বধ্যভূমিতে শহীদদের কয়েকজন হলেন- মকবুল হোসেন (পিতা হাজী মনসুর উদ্দিন, চিলাহাটি, ডোমার; শহীদের মুক্তিবার্তা নং ০৩১৫০৫০২২১, বাংলাদেশ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বে-সামরিক তালিকা গেজেট নং ২৪৯৭; ২৮শে মে শহীদ), মো. আব্দুল বারী (পিতা মেজাজ উদ্দিন সরকার, চিকনমাটি, পূর্ব ধনীপাড়া, ডোমার; সহকারী আনসার কমান্ডার হিসেবে নীলফামারী অস্ত্রভাণ্ডার থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে সৈয়দপুর গোলাহাট এলাকায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন; পরে এলাকায় ফিরে এলে রাজাকার দের সহযোগিতায় পাকবাহিনী তাকে গ্রেফতার করে এবং উপজেলা পরিষদ কোয়ার্টার্স ক্যাম্পে অমানুষিক নির্যাতন শেষে ২৫শে জুন হত্যা করে; শহীদের মুক্তিবার্তা নং ০৩১৫০৫০১২৬, বাংলাদেশ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বেসামরিক তালিকা গেজেট নং ২৪৯৮, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট নং শ/৫০৩৫), আব্দুর রহমান (পিতা আব্দুর কাদের, চিলাহাটি, ডোমার), কাছু (পিতা দিনামুদ্দিন খন্দুয়া, বড়রাউতা, ছায়াপাড়া, ডোমার), মুয়াজ্বিন মনির উদ্দিন, আব্দুল আউয়াল (তহশিলদার), শামসুদ্দিন, জসিম, আলা, দুলাল, জয়নাল, ফুল প্রমুখ। এ ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন জাভেদ (প্রথম) এবং ক্যাপ্টেন আল্লারাক্ষা (দ্বিতীয়)-র নেতৃত্বে এ নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়। [আহম্মেদ শরীফ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড