ডুমাইন যুদ্ধ (মধুখালী, ফরদিপুর)
ডুমাইন যুদ্ধ (মধুখালী, ফরদিপুর) সংঘটিত হয় ১২ই ডিসেম্বর। ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানাভুক্ত একটি গ্রাম ডুমাইন। থানা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার পশ্চিমে এর অবস্থান। এখানে ১২ই ডিসেম্বর পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একটি ভয়াবহ সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে ১০ জন পাকসেনা নিহত ও অনেকে আহত হয়। যুদ্ধে পাকবাহিনীর গুলিতে মফিজুর রহমান (ডুমাইন) ও হাফিজুর রহমান (নিশ্চিন্তপুর) নামে দুজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে যশোর ক্যান্টনমেন্টের পাকসেনারা গড়াই নদী পাড় হয়ে ফরিদপুরের দিকে অবস্থান নিতে থাকে। ১২ই ডিসেম্বর পাকসেনাদের একটি বড় দল নদীর পশ্চিম পাড়ে জড়ো হয়। এদিকে কমান্ডার শেখ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল বিল্লাল হোসেন হাবিলদারের তত্ত্বাবধানে ডুমাইন বটতলা খাল পাড়ে অবস্থান নেয়। এ দলে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। অন্যদিকে কয়েক শত পাকসেনা সমবেত হয়। দুটি এলএমজি, চারটি এসএলআর এবং ৩০টি রাইফেল নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের আক্রমণ করেন। পাকসেনারাও পাল্টা জবাব দেয়। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এক ঘণ্টা গুলি বিনিময়ের পর পাকিস্তানিরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। তবে তাদের কমপক্ষে ১০ জন সৈন্য নিহত হয়। আহত হয় অনেকে। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান ঘটনা স্থলে শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান লড়াইয়ের এক পর্যায়ে ধরা পড়েন। পরে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ডুমাইন যুদ্ধে অন্যদের সঙ্গে বিল্লান হোসেন, আজিজুর রহমান, রেজাউল হোসেন, আব্দুল জব্বার (নিঘুরদিয়া-নগরকান্দা), আব্দুল মালেক প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন এবং বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। [আবু সাঈদ খান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড