ডাকবাংলো-ফরিদগঞ্জ হাইস্কুল-ওয়াপদা রেস্টহাউস নির্যাতনকেন্দ্র (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর)
ডাকবাংলো-ফরিদগঞ্জ হাইস্কুল-ওয়াপদা রেস্টহাউস নির্যাতনকেন্দ্র (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর) চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ফরিদগঞ্জ থানার ডিসি হল, ফরিদগঞ্জ এ আর হাইস্কুল, সাবরেজিস্ট্রি অফিস ও ডাকবাংলোতে পাকবাহিনী বিচারের নামে সাধারণ মানুষের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাত। পাকবাহিনী খাজুরিয়া, মুন্সিরহাট, গল্লাক, রামগঞ্জ, গৃদকালন্দিয়া, কালিবাজার, রামপুর, হর্নিদুর্গাপুর, গজারিয়া, সাহেবগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজনদের ধরে এনে প্রথমে নির্যাতন করত। তারপর ডাকবাংলোর নারকেল গাছের সঙ্গে অথবা হাইস্কুলের কাঁঠাল গাছের সঙ্গে বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারত। কোনো-কোনো দিন ৫-৬ জনকে জীবন্ত ঝুলিয়ে পাকবাহিনী রাজাকারদের বেয়নেট চার্জের প্রশিক্ষণ দিত। যে রাজাকার যত বেশি হিংস্র ও অত্যাচারী হতে পারত, তাকে তত বেশি উৎসাহ দেয়া হতো।
ফরিদগঞ্জ বাজারের পাশে নদীর পাড়ে হিন্দুদের একটি আশ্রম ছিল। নেতৃপর্যায়ের রাজাকাররা সেখানে নারীদের নিয়ে আসর বসাত। গভীর রাত পর্যন্ত মদ্যপান ও অশ্লীল নৃত্য চলত। সেখানে সাধারণ রাজাকারদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। কোনো নারী যদি নাচ-গান ও অপকর্মে অস্বীকৃতি জানাত, তাহলে অন্যদের সামনে তার গোপনাঙ্গে লাঠি প্রবেশ করিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হতো। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে যখন পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে চরম মার খেতে শুরু করে, তখন রাজাকারদের অত্যাচার কমে আসে এবং তারা সারারাত ফরিদগঞ্জের চতুর্দিকে পাহারার ব্যবস্থা করে। [দেলোয়ার হোসেন খান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড