You dont have javascript enabled! Please enable it!

ডাঙ্গিসারা গণহত্যা (বদলগাছী, নওগাঁ)

ডাঙ্গিসারা গণহত্যা (বদলগাছী, নওগাঁ) সংঘটিত হয় জুন মাসে। এতে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বদলগাছী থানার আধাইপুর ইউনিয়নের সেনপাড়া গ্রামের জঙ্গলে পাকসেনারা চোখ বেঁধে লাইনে দাঁড় করিয়ে তাঁদের গুলি করে হত্যা করে। সেনাপাড়ায় হত্যা করা হলেও ডাঙ্গিসারা গ্রামে শহীদদের গণকবর দেয়া হয় বলে এ ঘটনা ডাঙ্গিসারা গণহত্যা নামে পরিচিত।
নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশের ভেতরে ও ভারতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। তাঁদের ৩ জন ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে নতুন ৬ জনকে বদলগাছীর ওপর দিয়ে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়ার পথে বদলগাছীর বালুভরা ইউনিয়ন পরিষদের মির্জাপুর মোড়ে রাজাকারদের হাতে ধরা পড়েন। এরপর তাঁদের পাকসেনাদের কাছে হস্তান্তর করলে তাঁরা নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। এক পর্যায়ে আধাইপুর ইউপির সেনপাড়া গ্রামের জঙ্গলে তাঁদের চোখ বেঁধে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩ মুক্তিযোদ্ধা গুলিতে আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। বাকি ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় শহীদ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধার লাশ উদ্ধার করে ডাঙ্গিসারা গ্রামে ছোট যমুনা নদীর ধারে গণকবর দেয়া হয়। ডাঙ্গিসারা গ্রামবাসী আহত ৩ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সেবা প্রদান করে। ডাঙ্গিসারা গ্রামে গণকবর দেয়া ৬ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হলেন- কাদের বক্স (পিতা করিম সোনার, দুর্গাপুর, ইউনিয়ন মৈনম, উপজেলা মান্দা), শাফায়েত মণ্ডল (পিতা কাওছার আলী মণ্ডল, দুর্গাপুর), ইয়াজউদ্দীন আকন্দ (পিতা মকা আকন্দ, দুর্গাপুর), লুৎফর রহমান মণ্ডল (পিতা লইম উদ্দীন মণ্ডল, দুর্গাপুর), মোহাম্মদ আলী খোকা (পিতা শশি মণ্ডল, প্রসাদপুর, মান্দা) ও বিরাজউদ্দীন (পিতা মাদার উদ্দীন, গণেশপুর, মান্দা)। আহত ৩ মুক্তিযোদ্ধা হলেন- মো. নজরুল মোল্লা (পিতা মীর মোল্লা, দুর্গাপুর, মান্দা), নিকবর মণ্ডল (পিতা কলিমুদ্দিন মণ্ডল) ও গছির উদ্দিন মণ্ডল (পিতা খায়রুল মণ্ডল, দুর্গাপুর)। ডাঙ্গিসারা গণকবর এখনো যথাযথভাবে সংরক্ষিত হয়নি। [চিত্তরঞ্জন মিশ্র]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!