টেউরপাড়া-বাঁশগাড়ি-নারচী যুদ্ধ (সারিয়াকান্দি, বগুড়া)
টেউরপাড়া-বাঁশগাড়ি-নারচী যুদ্ধ (সারিয়াকান্দি, বগুড়া) সংঘটিত হয় ২০শে অক্টোবর। এতে ৯ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকতে না পেরে তারা পালিয়ে যায়। তবে তারা বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে হত্যা করে।
এদিন সারিয়াকান্দি উপজেলার এ তিনটি গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মোকাবেলা করে মুক্তিবাহিনীর চারটি দল। প্রায় ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তোফাজ্জল হোসেন মকবুল, আব্দুল হামিদ, শোকরানা, ফজলুর আহসান দিপু, আ. সালাম ও রেজাউল করিম মন্টু। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বল ছিল প্রাচীন ধরনের রাইফেল, অন্যদিকে পাকিস্তানি সৈন্যরা আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রে সজ্জিত। ২০শে অক্টোবর পাকিস্তানি সৈন্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ করে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা কিছুটা পিছু হটে যান। পাকিস্তানি সেনারা গ্রামে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে কয়েকজন গ্রামবাসীকে হত্যা করে এবং বহু বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। ইতোমধ্যে বেনীপুরের আব্দুল হামিদের ২৪নং দল ও শোকরানার দলসহ অন্যান্য দলের ৫০-৬০ জন মুক্তিযোদ্ধা সংগঠিত হয়ে সারিয়াকান্দির টেউরপাড়া গ্রামের দিকে এগিয়ে যুদ্ধের জন্য পজিশন নেয়। এখানে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে তাদের প্রচণ্ড গোলাগুলি চলে। পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে টেউরপাড়া গ্রামের ১২ জন গ্রামবাসী নিহত হয়। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে ৯ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। এরপর বাঁশগাড়ি ও নারচীতে উভয় পক্ষের মধ্যে রাতভর গোলাগুলি চলে। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকতে না পেরে ভোরের দিকে পাকিস্তানি বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। [আহম্মেদ শরীফ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড