জোয়ারা অঁ-তলা অপারেশন (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম)
জোয়ারা অঁ-তলা অপারেশন (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলায় পরিচালিত এ অপারেশনে হানাদারদের নয়টি রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
জোয়ারা অঁ-তলা এখন চন্দনাইশ পৌরসভার অন্তর্গত এখানে একটি ব্রিজ নির্মিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদনি পর থেকে বিভিন্ন সময়ে এখানে কতিপয় পাকিস্তানি দালাল শরণার্থী হিন্দুদের অর্থ, সোনাদানা, দামি দ্রব্য প্রভৃতি লুটপাট করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আহমদ হোসেন ওরফে ছিয়া হোসেন (হাজিপাড়া), নাসির উদ্দিন (চন্দনাইশ সদর), মোহাম্মদ সিদ্দিক (চন্দনাইশ সদর), আলিউজ্জামান (চন্দনাইশ সদর), নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু (চন্দনাইশ সদর), আবদুশ শুক্কুর ওরফে শুক্কুইয্যা (চন্দনাইশ সদর), আবদুল আজিজ চৌকিদার (হাজিপাড়া), নজরুল ইসলাম ওরফে নজু মিয়া (হাজিপাড়া), আইয়ুব আলী (পূর্ব জোয়ারা), নুরুল হক (হাজিপাড়া), আবু তাহের চৌধুরী ওরফে দুধু মিয়া (পূর্ব জোয়ারা), মোহাম্মদ জকরিয়া দুলু (পূর্ব জোয়ারা), কাঞ্চন (হাজিপাড়া), নবী আহমেদ (হাজিপাড়া), সাবের আহমদ (হাজিপাড়া), হাবিবুর রহমান (হাজিপাড়া) প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে অঁ-তলায় দালালদের লুটপাটের মাত্রা = বৃদ্ধি পাওয়ায় মীর আহমদ চৌধুরী গ্রুপের একদল মুক্তিযোদ্ধা তাদের ওপর অপারেশন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত – অনুযায়ী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আবুল বশর (পিতা মাওলানা মো. ইছহাক)-এর নেতৃত্বে তাঁরা দালালদের ওপর আক্রমণ করেন। দালালরাও পাল্টা আক্রমণ করে। ফলে উভয় পক্ষে যুদ্ধ শুরু হয়। প্রায় দুঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর মুক্তিযোদ্ধারা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করলে দালালরা পিছু হটে। সে-সময় তারা ৯টি থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল ফেলে যায়, যেগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
অঁ-তলা অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন: আবুল বশর (পিতা মাওলানা মো. ইছহাক, ভাইখলিফাপাড়া, উত্তর হাশিমপুর), মোহাম্মদ ইউছুপ ওরফে ইঞ্চিয়া (পিতা খুইল্যা মিয়া, পশ্চিম হারলা), আছহাব মিয়া (পিতা মতিউর রহমান, মধ্যম চন্দনাইশ), আমিনুল হক চৌধুরী (পিতা বদিউল হক চৌধুরী, সাতবাড়িয়া), নূর খালেক (ধোপাছড়ি), অনিল বড়ুয়া (শালঘাটা) প্রমুখ। অপারেশনে আশুগঞ্জ ও ভোলার দুজন অজ্ঞাতনামা মুক্তিযোদ্ধাও অংশ নিয়েছিলেন। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড