জোয়ারিয়ানালা লাল ব্রিজ অপারেশন (রামু, কক্সবাজার)
জোয়ারিয়ানালা লাল ব্রিজ অপারেশন (রামু, কক্সবাজার) পরিচালিত হয় ২৮শে আগস্ট। এতে ২ জন পুলিশ ও ১০ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। এছাড়া ২টি রাইফেল ও ৮৫টি গুলি মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
জোয়ারিয়ানালা রামু উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। জোয়ারিয়ানালা ব্রিজের অবস্থান রামু রাবার বাগানের উত্তর পাশে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনাইছড়ি খালের ওপর রয়েছে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত লোহার ব্রিজ, যা স্থানীয়ভাবে লাল ব্রিজ নামে পরিচিত। কক্সবাজার দখল করার পর যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য হানাদার বাহিনী এ ব্রিজে সার্বক্ষণিক প্রহরা বসায়।
আবদুস ছোবহান বাহিনীর অধিনায়ক আবদুস ছোবহানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বার্মা থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে সর্বপ্রথম লাল ব্রিজে অপারেশন পরিচালনা করেন। প্রথমে পথচারী ও দিনমজুরের ছদ্মবেশে তাঁদের একটি পর্যবেক্ষণ দল জোয়ারিয়ানালা ব্রিজ রেকি করে হানাদারদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। তাঁরা ব্রিজের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ ও রাজাকারদের সংখ্যা, অবস্থান, অস্ত্র, বাংকার প্রভৃতি বিষয়ে নিশ্চিত হন। ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ৫টি গ্রুপে ভাগ করে ২৮শে আগস্ট মধ্যরাতে অধিনায়ক আবদুস ছোবহান জোয়ারিয়ানালা ব্রিজে অভিযান পরিচালনা করেন। মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা পদ্ধতিতে ব্রিজের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও রাজাকার সদস্যদের আক্রমণ করে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে। এ সময় ২ জন পুলিশ ও ১০ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে।
আত্মসমর্পণের পর তাদের কাছ থেকে ২টি থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল ও ৮৫টি রাউন্ড বুলেট মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। এটি ছিল কক্সবাজার সাব-সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম সফল অভিযান। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৪র্থ খণ্ড